নিউজ ডেস্ক:চলমান কৃষক আন্দোলনের বেগ কমিয়ে দিতে দিল্লির আশপাশের সীমান্ত এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে দুমাস ধরে ভারতের লাখো কৃষক সড়কে আন্দোলন করছেন। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকরা ট্রাক্টর মিছিল নিয়ে রাজধানী দিল্লি ঢুকে পড়েন।
পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাতে এক কৃষকের মৃত্যুসহ আহত হন শতাধিক। সংঘর্ষে চারশ’ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি দিল্লি পুলিশের। ওই ঘটনায় পুলিশ দুই ডজন মামলা করেছে।
দীর্ঘদিন চলা কৃষক আন্দোলনের সমাপ্তি চায় নরেন্দ্র মোদির কট্টর বিজেপি সরকার। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির জন্য।
কারণ কৃষকের প্রতি ভারতীয়দের পাশাপাশি বিদেশিরাও সোচ্চার। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্র–ডো কৃষকের ন্যায্য দাবির পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন। ভারতের সুপ্রিমকোর্টও প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার নির্দেশনা দিয়ে আইনটি স্থগিত করেছেন।
এ অবস্থায় শনিবার ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীর ৭৩তম মৃত্যু দিবসে তার অহিংস আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানাতে শনিবার অনশন করেন কৃষক নেতারা।
সংযুক্ত কৃষাণ মোর্চা গ্রুপের নেতা দর্শন পাল বলেন, ‘কৃষকদের এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল এবং শান্তিপূর্ণ থাকবে। সত্য এবং অহিংসার মাহাত্ব ছড়িয়ে দিতেই আমরা ৩০ জানুয়ারি এ গণঅনশনের আয়োজন করেছি।’
কৃষকদের আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারের সঙ্গে কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের ১১ দফা আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সব আলোচনাই ব্যর্থ হওয়ায় এ অচলাবস্থার অবসান হচ্ছে না। কৃষকরা মোদি সরকারের করা নতুন ওই তিন কৃষি আইন সম্পূর্ণ প্রত্যাহার চান।
ভারতীয় কৃষকদের আশঙ্কা, নতুন কৃষি আইনের ফলে সরকার আর ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে বাধ্য থাকবে না। বাজারের ওপর সরকারের নজরদারিও কমে যাবে।
ফলে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির হাতে চলে যাবে এবং কৃষকদের জীবন তাদের দয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে সরকার চায় কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও আইন ঠিক রাখতে। সর্বশেষ শনিবার মোদি বলেছেন, কৃষক নেতারা একটি ফোন করলেই আইন স্থগিত করা হবে।
কিন্তু অনড় কৃষকরা চান কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে সরকার যেন আইন তিনটি বাতিল করতে বাধ্য হয়। আন্দোলন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের বেশি কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন।