চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটিতে বসতবাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিরোধ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকার হাজিরাহাটিতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ডেকে নিয়ে শেরেগুল (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারই ভাতিজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটিতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই অভিযুক্ত ভাতিজা আরিফ ও তার পরিবারের সদস্যরা সটকে পড়ে। তবে এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত কৃষক শেরেগুল আলী চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিএন্ডবি পাড়ার মৃত. বরকত আলীর ছেলে। তবে এ ঘটনার এখনো পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি বলে জানায় পুলিশ। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখে।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের উচুপাড়ায় শেরেগুল হোসেনের পৈতৃক জমির পাশে সপ্তাহ খানেক আগে থেকে বসতবাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করে তারই আপন ফুফাতো ভাই আবু তালেব। শেরেগুলের পৈতৃক জমি পিছনে থাকায় কিছুটা সমস্যা হলে তার জমিটা ফুফাতো ভাই আবু তালেবের নিকট বিক্রয়ের জন্য বলে। শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় কেনার জন্য রাজি হয় আবু তালেব। অপরদিকে শেরেগুল জমির টাকা পরিশোধ না করে বাড়ির কাজ করতে নিষেধ করে। এই নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে গতকাল সকালে পরিকল্পনা অনুযায়ী শেরেগুলকে হাজরাহাটি আসার জন্য বলে আবু তালেব। সকালে শেরেগুলসহ পরিবারের কয়েকজন হাজরাহাটিতে গেলে তারা দেখেন নিষেধ করা সত্বেও বাড়ির নির্মাণ কাজ চলছে। পরে আবু তালেবকে নিষেধ করলে উভয়পক্ষ মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হিয়। এক পর্যায়ে নির্মাণ প্রাচীর ভেঙে দেয় শেরেগুলের লোকজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পনা ছিল অনুযায়ী কোদাল দিয়ে শেরেগুলের মাথায় কোপ দেয় আবু তালেবের ছেলে আরিফ। এতে গুরুতর জখম হয় শেরেগুল। তাৎক্ষানিক তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী রেফার্ড করেন। বিকেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে শেরেগুলের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, হাজরাহাটি গ্রামে শেরেগুল হোসেনের জমিতে বসতবাড়ি নির্মাণ করছিল তার আপন ফুফাতো ভাই আবু তালেবের ছেলে আরিফ হোসেন। পরে তাকে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শেরেগুলের মাথায় কোপ দেয় আরিফ। এতে গুরুত্বর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। বিকেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পথে শেরেগুলের মৃত্যু হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, শেরেগুলের মাথায় প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। রক্তক্ষরণ হওয়ায় আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহীতে রেফার্ড করেছি। এদিকে নিহত শেরেগুলের মৃত্যুতে বাড়িতে নেমে আসে শোকের মাতম। এলাকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে আসে। এতে শেরেগুলের পরিবারের লোকজন যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার পরই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নুর হোসেন নামের একজনকে সন্দেহভাজনভাবে আটক করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ বা মামলা করেনি নিহতের পরিবার। আজকে মামলা হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।