মু.ওয়াছীঊদ্দিন,লক্ষীপুর প্রতিনিধিঃ- লক্ষীপুরের উপক‚লীয় অঞ্চলে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। এছাড়া জেলায় মৎস্যজীবী রয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজার। জীবিকার তাগিদে দূর্যোগ মৌসুমেও যাদের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে যেতে হয়। এজন্য দূর্যোগ মৌসুমে তাদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে রামগতি পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের চর সেকান্দরে নির্মাণ করা হয় অভ্যন্তীরণ নৌ-চলাচল পূর্বাভাস কেন্দ্র। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেড় একর জমির ওপর ভবনসহ এ কেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয় ১ কোটি টাকা। এরপর প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি কেন্দ্রটির কার্যক্রম।
তবে আবহাওয়াসংক্রান্ত কার্যক্রম না থাকলেও সেখানে গণপূর্ত বিভাগের অধীনে নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে তিনতলা একটি আবাসিক ভবন, যা নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, কার্যক্রম চালু না করে এত টাকা খরচ করে নতুন ভবন নির্মাণের যৌক্তিকতা নেই। অফিসটির কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় তাদের ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। সময়মতো পূর্বাভাস না পাওয়ায় প্রতি বছরই এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। অথচ এটি চালু হলে সহজেই দুর্যোগের পূর্বাভাস মিলত।
সরেজমিন ওই অফিসে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষদিকে। তবে মূল অফিসে কাউকে পাওয়া যায়নি। কক্ষগুলোয় তালা ঝুলছে। সামনের বারান্দায় আবর্জনার স্তূপ। সামনের মাঠ পরিণত হয়েছে গোচারণভূমিতে। খোঁজ জানা যায়, অফিসটি দেখভালের জন্য দুজন আনসার সদস্য নিয়োগ করা হলেও তারা অফিসে আসেন না। তারা শুধু মাস শেষে এসে পুরো মাসের হাজিরা তুলে যান।
এ বিষয়ে কথা হলে রামগতি পৌরসভা প্যানেল মেয়র শাহাদাত হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করা হলেও অফিসের কোনো কার্যক্রম নেই; নেই প্রয়োজনীয় লোকবল ও যন্ত্র। এ অবস্থায় নতুন করে আরো একটি ভবন নির্মাণ করার যৌক্তিকতা কী? প্রতি বছরই জনবল নিয়োগ করে কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও, তা হচ্ছে না।’
রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবেদককে বলেন, ‘আবহাওয়া অফিসটি চালু না হওয়ায় উপক‚লীয় এ জেলার মানুষ দূর্যোগ মোকাবেলায় আগাম সতর্কতা বার্তা পাচ্ছেন না। নতুন করে ভবন নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজগর আলী জানান, আবহাওয়া অফিস চালু না হতে আরেকটি ভবন নির্মাণের বিষয়টি তারও জানা নেই। কার্যক্রম চালুর বিষয়ে জানতে আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসারদের খবর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা দেখা করতে আসেনি।
জানতে চাইলে ল²ীপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। আশা করি, খ্বু দ্রæত যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়োগ করে আবহাওয়া অফিসের কার্যক্রম চালু করা হবে।’