বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

বয়স ৮ মাস, খায় ১০ বছরের শিশুর সমান !

নিউজ ডেস্ক:

চাহাত কুমার, বয়স মাত্র আট মাস। এই বয়সেই তার ওজন প্রায় সাড়ে ১৭ কেজি। ভারতের পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া এই মেয়েটিকে দেখলে মনে হয় আড়াই বছরের শিশু। কিন্তু খাওয়া-দাওয়া করে সে একটি দশ বছরের শিশুর ন্যায়। তার ক্ষুধার কোন শেষ নেই। তার খাবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম বাবা-মা।

শিশুটির বাবা-মা বলছেন, এটি ঈশ্বর প্রদত্ত, এর জন্য কিছু করার নেই তাদের। তবে ডাক্তাররা আট মাসের শিশুর এতো বেশি খাবার গ্রহণ নিয়ে চিন্তিত। ভবিষ্যতে শিশুটির মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে তারা সতর্ক করেছেন।

ডাক্তাররা জানান, একটি ১০ বছর বয়সী শিশু যে পরিমাণ খাবার খায়, চাহাতকেও সে পরিমাণ খাবার দিতে হচ্ছে। ফলে তার ওজন বাড়ছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যার কারণে সে বেশি ঘুমিয়ে পড়ছে শিশুটি।

স্থানীয় ডাক্তারদের স্বাস্থ্য রিপোর্টে বলা হয়, চাহাতের শরীরের চামড়া শক্ত, তার চামড়া ও রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে, স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ সত্ত্বেও তার ওজন অত্যধিক। শিশুটির উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।

চাহাতের বাবা সুরজ কুমার (২৩) বলেন, ‘চাহাত যখন জন্মগ্রহণ করে তখন স্বাভাবিক ছিল। পরে ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে থাকে। দিনে দিনে তার ওজন শুধু বাড়ছে এবং তাকে প্রচুর খাওয়াতে হচ্ছে।’

সুরজ আরো বলেন, ‘এর জন্য আমাদের কোনো দোষ নেই। চাহাতের এ অবস্থা ইশ্বর প্রদত্ত । এতে আমাদের হাত নেই। কিন্তু খারাপ লাগে যখন কিছু মানুষ ওকে দেখে হাসাহাসি করে এবং খারাপ ভাবে।’

চাহাতের মা রিনা (২১) জানান, তার সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। চাহাতের আগে তাদের একটি ছেলে মারা গিয়েছিল। চাহাত তাদের দ্বিতীয় সন্তান।

রিনা বলেন, চাহাত স্বাভাবিক বাচ্চার মতো খায় না। সব সময় বেশি খাবার দিতে হয়। সময় মতো খাওয়া না দিলে কান্নাকাটি করে। ওজন বেশি হওয়ায় বাইরে বেশি দূরে নিয়ে যাওয়া হয় না তাকে।

পারিবারিক ডাক্তার বাসুদেব শর্মা জানান, এটি তার জীবনে প্রথম অভিজ্ঞতা। জন্মের পর চার থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত শিশুটির যে পরিমাণ ওজন বেড়েছে তা এর আগে কখনো দেখেননি তিনি।

বাসুদেব শর্মা বলেন, ‘চাহাতের শরীরে অত্যধিক চর্বি, চামড়া অনেক শক্ত যে কারণে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আমরা বহুবার চেষ্টা করেছি। তার চামড়া এতটাই কঠিন যে আমরা কখনও তার অবস্থা নির্ণয় করতে পারি না। তার ওজন বাড়ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হবে।’

তিনি অমৃতসর স্পেশালাইজড সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শিশুটির স্বাস্থ্য ঠিক হয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে স্বাভাবিক শিশুর মতোই বেড়ে উঠবে।

চাহাতের বাবা-মা বলছে তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। তাই মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular