স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ সেলিম আজাদ খানের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অর্থ আত্মসাত, কমিশনের বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া, অফিসের কর্মীদের সাথে প্রচন্ড দুর্ব্যাবহার সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহ জেলার রাস্তাঘাট গুলোর বেহাল দশা, দুর্ঘটনা রোধে সরকার বর্ষা মৌসুমে যাতে জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার না হয় তাই জরুরি মেরামতের জন্য ঝিনাইদহ শহরের আরাবপুর মোড়, তাসলিমা ক্লিনিকের সামনে, যশোর ঝিনাইদহ সড়কের তেতুলতলা বাজার, কালীগঞ্জ মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের সামনে সহ আরো বেশ কয়েকটি জায়গার রাস্তা মেরামতের ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার বরাদ্দ করে।
এই বরাদ্দকৃত অর্থ নাম মাত্র কাজ করে বিভিন্ন ঠিকাদারের নামে আর.এফ.কিউ ও ডি.পি.এম করে নিজেই বিল উঠায়ে নেয়। তাছাড়া হামদহ থেকে পোস্ট অফিস মোড় হয়ে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ছিল যেখানে ৬ মিলি উচ্চ করে পিজ দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কথা ছিল কিন্তু সড়ক বিভাগের লোকজন দিয়ে নাম মাত্র কাজ করে ১৮ লক্ষ টাকা নিজ পকেটে উঠায়েছে। শিশু একাডেমীর সামনে হয়ে গোরস্থান পর্যন্ত কোন কাজ করে নাই। এমনকি কোথাও ৩ মিলি করে কাজের কোন নমুনা দেখা যায়নি।
তাছাড়া ঝিনাইদহ যশোর মহাসড়কের পাশে যেখানে যেখানে সড়ক থেকে নিচু হয়ে গেছে সেই সমস্ত জাইগা গুলিতে মাটি দিয়ে ভরাট করার জন্য ৫ লক্ষ টাকা উঠায়ে নিয়েছে। এই মহাসড়কের দুই পাশে কোথাও এক ঝুড়ি মাটি দেওয়া হয়নি। যাহার কারনে এই সড়কে প্রতিনিয়ন লেগে আছে দুর্ঘটনা।দুইটা গাড়ি পাশাপাশী সাইড কিম্বা অভারটেক করতে গেলে পাকা সড়কের পাশের গর্তে পড়ে ভ্যান, ইজিবাইক, আলম সাধু পরিবহনের দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এই কারনেই প্রতিদিন এই সড়কের পাশের বেহাল দশায় প্রায় দিন লেগে আছে মানুষের মৃত্যুর মিছিল। এর দায় আর কার নয়, দায় অর্থলোভী দুর্নীতি বাজ মানুষটির।
এই নির্বাহী প্রকৌশলী ঝিনাইদহ অফিসে যোগদান করার পর ১৮ গ্রুফ কাজের টেন্ডার হয়েছে। দেখা গেছে, বার বার কি অজ্ঞাত কারনে ২/৩ টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাদে আর কেউ কাজ পায়নি। এ নিয়ে ঠিকাদারদের মাঝে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন ঠিকাদার সাংবাদিকদের জানান, যে তার পছন্দের ঠিকাদারের আই.ডি ও পাশ ওয়ার্ড নিয়ে রেখে নিজেই নি¤œ কর্ড বসিয়ে দেয় অফিশিয়াল ভাবে কাজ পাইয়ে দেন। নিয়ম আছে নির্বারিত বরাদ্দের ১০% লেস দিয়ে টেন্ডার ড্রাপ করতে হবে। ম্যানুয়াল অনুযায়ী কাজের নির্ধারিত বরাদ্দ কত তাহা একমাত্র নির্বাহী প্রকৌশলী ভিন্ন অন্য কেউ জানে না। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, সর্বনি¤œ দরপত্র দাতা হিসাবে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রথমে থাকলেও সে প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে।
বিশ্বস্ত সুত্র থেকে জানা গেছে, কোন কাজের দরপত্র আহবান করলে ঠিকাদের মুল বাজেটের ১০% লেস দিয়ে শিডিউল জমা দিতে হয়। তারপর ভ্যাট ইনকাম ট্যাক্স বাবদ ১০% এবং অফিস খরচ বাবদ ৫% তাহা ছাড়া যারা নির্বাহী প্রকৌশলীকে ৭ % দিতে রাজি হয় তারা কাজ পায়। হিসাব করে দেখা গেছে বরাদ্দ কৃত কাজের মোট ৩২% বাদ দিয়ে একজন ঠিকাদারের কাজ করতে হয়। তার মধ্যে থেকে ঠিকাদার নিজে লাভ করে। এই প্রক্রিয়া যদি একটি কাজ হয় তাহলে সেই কাজ টি কি ভাবে টেকসই হতে পারে? তাতে যা হবার হচ্ছে তার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারন মানুষের জীবন দিয়ে।
এই সেলিম আজাদ খান ০৮/১১/২০১৬ তারিখ ঝিনাইদহে যোগদান করার পর প্রায় ৩ কোটি টাকার দরপত্রের কাজ হয়েছে। তা থেকে সে ঘুষ গ্রহণ করেছে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা সহ হিসাব করলে এই কয় মাসে সে দুর্নীতি করেছে পায় কোটি টাকার উপরে। যাহা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। তাছাড়া তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে টিকতে না পেরে ৯ জন স্বেচ্ছায় অন্যত্র বদলি হয়ে গেছে। বাকি ২৯ জন কর্মচারী সেলিম আজাদ খানের বিরুদ্ধে-কর্মকর্তা প্রধান প্রকৌশলী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সড়ক ভবন, তেঁজগাও ঢাকা অফিসে কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ দায়ের করেছে। সেলিম আজাদ খান কোথাও পূর্ণ মেয়দকাল অতিবাহিত করতে পারেনি। এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানার জন্য ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ সেলিম আজাদ খানের মোবাইলে ফোন করলে কল রিসিভ করেননি।