রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫

বৈরী আবহাওয়া আর অসময়ে বৃষ্টি: ঝিনাইদহে পাট চাষে লোকসানে চাষী

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ

বৈরী আবহাওয়া আর অসময়ে বৃষ্টির কারণে ঝিনাইদহে পাটের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছেন চাষীরা। ইতিমধ্যে ৭০ ভাগ জমির পাট জমি থেকে কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষি অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় ২২ হাজার ৪’শ ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ২’শ ২০ হেক্টর, কালীগঞ্জে ১৬’শ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৮’শ ২০ হেক্টর, মহেশপুরে ৩ হাজার ২’শ ১০ হেক্টর, শৈলকুপায় ৭ হাজার ৯’শ ৫০ হেক্টর ও হরিণাকুন্ডুুতে ৩ হাজার ৬’শ ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৪’শ ৯৬ মেট্টিক টন। পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হচ্ছে না।

কারণ হিসেবে কৃষকরা বলছেন, পাটের বাড়ন্ত সময় বৃষ্টির কারণে ফলন ভালো হয়নি। শৈলকুপা উপজেলার উত্তর মির্জাপুর গ্রামের পাটচাষী রুহুল আমিন জানান, পাটবীজ জমিতে রোপন করার পর পাটের চারা ভালো গজিয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পাটের গোড়ায় শেকড় গজিয়ে যায়।

যে কারণে র বাড়ন্ত কমে যাওয়ায় এবার ফলন কম হয়েছে। মহেশপুর উপজেলার সামান্তা গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া জানান, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছিলেন। বৃষ্টির কারণে একটি জমির পাট বড় না হওয়ায় শুরুর দিকে তা কেটে অন্য আবাদ করছি। ২ বিঘা জমিতে যে পাট ছিল তারও ফলন ভালো হয়নি। এবছর পাট চাষে লোকসান গুনতে হচ্ছে। সদর উপজেলার পবহাটি গ্রামের কৃষক আলিম উদ্দিন জানান, তিনি ১ বিঘা জমিতে এ বছর পাটের আবাদ করেছেন। পাট বীজ, চাষাবাদ, সার প্রয়োগ, নিড়ানী, পাট পরিচর্যা, শ্রমিক খরচ, পাট জমি থেকে কেটে পানিতে জাগ দেওয়া, আশ ছাড়ানো পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৩৪ হাজার টাকা। ২২ কাঠা জমিতে তিনি পাট আশা করছেন ১৩ থেকে ১৪ মন। যার বর্তমান বাজার মুল্যে ২৮ হাজার টাকা।

পাটকাঠি বিক্রি হবে ৫ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে তার লোকসান হচ্ছে ১ হাজার টাকা। তিনি বলেন, আমার জমিতে অন্যদের তুলনায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তবুও লোকসান হবে। তাহলে যাদের ফলণ ভালো হয়নি তাদের কি পরিমান লোকসান গুনতে হচ্ছে।

শৈলকুপা উপজেলার ভাটই গ্রামের পাটচাষী রাশেদ মোল্লা বলেন, বর্তমানে বাজারে পাটের দাম ১৬’শ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও উৎপাদন কম হওয়ায় এবার লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষীদের। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও পুরণ হচ্ছে না উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা।

এক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন প্রনোদনার আওতায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সহযোগিতা করার হবে।

 

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular