1. [email protected] : amzad khan : amzad khan
  2. [email protected] : NilKontho : Anis Khan
  3. [email protected] : Nil Kontho : Nil Kontho
  4. [email protected] : Nilkontho : rahul raj
  5. [email protected] : NilKontho-news :
  6. [email protected] : M D samad : M D samad
  7. [email protected] : NilKontho : shamim islam
  8. [email protected] : Nil Kontho : Nil Kontho
  9. [email protected] : user 2024 : user 2024
  10. [email protected] : Hossin vi : Hossin vi
বেক্সিমকোর যুবরাজদের ৮৪৬ কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি লন্ডনে | Nilkontho
২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | শুক্রবার | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হোম জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি জেলার খবর আন্তর্জাতিক আইন ও অপরাধ খেলাধুলা বিনোদন স্বাস্থ্য তথ্য ও প্রযুক্তি লাইফষ্টাইল জানা অজানা শিক্ষা ইসলাম
শিরোনাম :
বীরগঞ্জে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের অবহিকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত বীরগঞ্জে বাক প্রতিবন্ধী যুবকের লাশ উদ্ধার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মমতার ক্ষোভ ষাটগম্বুজ মসজিদ এলাকার শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে দূর্বৃত্তরা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগে পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক সাড়ে তিন হাজার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা চাঁদাবাজ-দখলবাজ ধরিয়ে দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার, বিএনপি নেতার ঘোষণা গাইবান্ধা জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন এর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ এবং অবসর ৬৫ বছর করার দাবির চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ঢাবিতে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, শাহবাগ থানায় প্রশাসনের মামলা ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত বিষয়ে যা জানালো জার্মানি সোহেল তাজকে যে গানটি শুনিয়েছিলেন শেখ হাসিনা গাঁজাসহ তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের ডাকবাংলা অংশের বেহাল দশা দর্শনায় মৎস্য চাষ বিষয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত আলমডাঙ্গার নবাগত ইউএনও মেহেদী হাসানের যোগদান অসহায় কিশোরী মায়ের আকুতি পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের সংখ্যা জানালো যাত্রী কল্যাণ সমিতি আরো এক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারক মানিক গ্রেপ্তার

বেক্সিমকোর যুবরাজদের ৮৪৬ কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি লন্ডনে

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। হাসিনার পতনের পর  ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা দলের অনেক সদস্যরাই আইনের মুখোমুখি হয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের সময় প্রশাসনের সবচেয়ে প্রভাবশালী তিন ব্যক্তির একজন সালমান এফ রহমান।

সালমান এফ রহমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।

তার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ম পরিধি বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক বিস্তৃত। আর বিস্তৃত এই ব্যবসা একসময় তাকে ‘বাংলাদেশের কর্পোরেট সংস্কৃতির জনক’ উপাধি এনে দেয়।

শেয়ার বাজারে কারসাজি এবং বড় ধরনের ঋণ খেলাপির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব তিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মোকাবিলা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ব্যাংক ঋণ এবং শেয়ার বাজারের কারসাজি নিয়ে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ইতিহাস খুব ভালোভাবে নথিভুক্ত থাকার পরেও এ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত বা জনসাধারণের কাছে প্রকাশের সাহস করেনি কেউ।

হাসিনা সরকার পতনের পর দেখা যায়, সালমান এফ রহমানের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ৩৬ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। শ্রেণিকৃত করার জন্য ওভারডিউ হয়ে গেলেও একাধিকবার পুনঃতফসিলের মাধ্যমে এসব ঋণের বেশিরভাগ অ-শ্রেণিকৃত রাখা হয়েছে।

বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে পাচার এবং আর্থিকখাতে অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডির উচ্চপদস্থ সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ৩৩ হাজার  ৪৭০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। গত ১৫ বছরে সাতটি ব্যাংক থেকে ঋণের মাধ্যমে তিনি এই অর্থ নিয়েছেন।

প্রশ্ন হলো পাচারকৃত এ অর্থ দিয়ে সালমান এফ রহমান কী করেছেন এবং কোথায় রেখেছেন,

লন্ডন জুড়ে তার একমাত্র ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং তার ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের মালিকানাধীন উল্লেখযোগ্য ফ্ল্যাট-বাড়িই অনুসন্ধানের মূল সূত্র হিসেবে কাজ করতে পারে। আর তা-ই বিশাল সম্পদ কী করছেন সে প্রশ্নের কিছুটা উত্তর পাওয়া যেতে পারে। বলে রাখা ভালো সালমান এফ রহমানের ছেলে এবং ভাতিজা—দুজনই ব্রিটিশ নাগরিক।

লন্ডনে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট

সালমান এফ রহমান তার বিশাল সম্পদ কি করেছেন তার কিছুটা উত্তর পাওয়া যেতে পারে লন্ডনে তার একমাত্র ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং তার ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের মালিকানাধীন বিলাসবহুল বাড়ির দিকে তাকালে। উল্লেখ্য, সালমান এফ রহমানের ছেলে এবং ভাতিজা—দুজনই ব্রিটিশ নাগরিক।

বাকিংহাম প্যালেসের খুব কাছের সবচেয়ে দামি এলাকার একটি হলো লন্ডনের ১ গ্রোসভেনর স্কয়ার এলাকা। এই ১ গ্রোসভেনরে স্কয়ারেই বিশ্বের অতি ধনীদের অতি বিলাসবহুল একটি আবাসিক ভবন অবস্থিত।

২০২২ সালের ৭ মার্চ এই ঐতিহাসিক আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ৪১৬ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকায় (২৬.৫ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড) বিক্রি হয়। এই ভবনটিতে ২৪ ঘণ্টা পাঁচ তারকা হোটেলের সুযোগ-সুবিধা এবং দূতাবাসস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে।

এই অ্যাপার্টমেন্টের ক্রেতা হলেন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে নিবন্ধিত ওয়ান গ্রোসভেনর স্কয়ার নামের একটি কোম্পানি। এই কোম্পানির সুবিধাভোগী হলেন সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। এই অ্যাপার্টমেন্টই লন্ডনে শায়ানের একমাত্র সম্পত্তি নয়। লন্ডনে তার আরও সম্পত্তি রয়েছে।

এই ১ গ্রোসভেনর স্কয়ার থেকে মাত্র ৩৫০ মিটারেরও কম দূরত্বে ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ারে ১৭শ শতকের আরও একটি ঐতিহাসিক বাড়ি আছে। যেটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে রূপান্তর করা হয়েছে।

২০১০ সালের ২৫ জুন এই ঐতিহাসিক ভবনের ষষ্ট তলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ৭২ কোটি ১৩ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি টাকায় (৬.৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডে) ক্রিকলউড বেঞ্চার নামের একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়। এই ক্রিকলউড বেঞ্চারও ওই আইল্যান্ডের বাসিন্দার নামে নিবন্ধিত কোম্পানি। যার সুবিধাভোগী ৪২ বছর বয়সী শায়ান।

ক্রিকলউড ভেঞ্চার নিবন্ধনে যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেই একই ঠিকানা তিনটি ট্রাস্টে ব্যবহৃত হয়েছিল, যাদের নাম প্যান্ডোরা পেপার্সে (অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বিদেশে নিয়ে লুকানোর এবং কর ফাঁকির গোপন জগত নিয়ে অনুসন্ধানী এক রিপোর্ট) এসেছিল।

লন্ডনে শায়ানের আরও একটি বাড়ি আছে। আর সেটি লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনের অভিজাত পাড়ায় অবস্থিত একটি সেমি-ডিটাচড বাড়ি। এই বাড়িটি ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি ১৮ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকায় (১.২ মিলিয়ন পাউন্ড) কেনা হয়। আর বাড়িটির মালিকানায় রয়েছে লেডিবার্ড প্রোপার্টি। ক্রিকলউড ভেঞ্চার ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপের যে ব্যক্তির ঠিকানায় নিবন্ধিত, সেই একই ঠিকানায় এই লেডিবার্ড প্রোপার্টিও নিবন্ধিত। আর এর সুবিধাভোগীও শায়ান। এই বাড়িটিতেই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানা বিনা ভাড়ায় থাকেন বলে ২০২২ সালের শুরুর দিকে সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

লন্ডনে সম্পদ কেনায় কম যাননি শায়ানের চাচাতো ভাই বেক্সিমকোর চেয়ারম্যান আহমেদ সোহাইল ফাসিহুর রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানও। শাহরিয়ার লন্ডনের টনি মেফেয়ার এলাকায় বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। শায়ানের বাড়ি থেকে অল্প  দূরেই (ঢিল ছোড়া দূরত্বে) ৫ গ্রোসভেনর স্কয়ারে ভবনটি অবস্থিত। এই ভবনটিও অতি ধনীদের আবাসস্থল হিসেবেই পরিচিত।

২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জার্সিতে নিবন্ধিত নর্থ ডিউক হোল্ডিংস নামের একটি কোম্পানি ওই ভবনে দুটি ফ্ল্যাট কেনে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য ছিল ৪৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকার বেশি (৩.১ মিলিয়ন পাউন্ড) করে। নর্থ ডিউক হোল্ডিংসের সুবিধাভোগী হলেন ৪৬ বছর বয়সী শাহরিয়ার যিনি শ্যারি নামে অধিক পরিচিত। আর এই নর্থ ডিউক হোল্ডিংস যে ঠিকানায় নিবন্ধিত সেই একই ঠিকানা আরও ছয় ব্যক্তি ব্যবহার করেছেন, যাদের নাম পানামা পেপার্সে (গোপনীয়তা রক্ষাকারী হিসেবে স্বীকৃত পৃথিবীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকা, যেটি পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠান, সেখান থেকেই ফাঁস হয় ১১ মিলিয়ন নথিপত্র। ওই নথিপত্রগুলোকেই বলা হচ্ছে পানামা পেপার্স) এসেছিল।

সাত বছর পর শাহরিয়ার আরেকটি শেল কোম্পানির (ভুঁইফোড় বা নামকাওয়াস্তে কোম্পানি) আওতায় একই ভবনে আরেকটি ফ্ল্যাট কেনেন ১৪১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ( ৯ মিলিয়ন পাউন্ড) দিয়ে। আর এই কোম্পানিটিও নর্থ ডিউকের ঠিকানায় নিবন্ধিত। এছাড়াও এই ফ্ল্যাট থেকে ৫ মিনিট হাঁটা দূরত্বে তার আরেকটি বাড়ি আছে।

এই বাড়িটি ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর ৭০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা (৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড) দিয়ে কেনা হয়েছিল। এটা কেনা হয়েছিল আইল্যান্ডে নিবন্ধিত ক্রেগ্গান কনসালটেন্সি নামে আরেক শেল কোম্পানির আওতায়।

বিলাসবহুল ফ্লাট বাড়ির পাশাপাশি বিলাসী পণ্যের বিশ্বখ্যাত কোম্পানি লোরো পিয়ানার ‘বিলিয়ননিয়রস লোফারস’ (ধনকুবেরদের জুতা) আর স্যাভিল রো টেইলর টার্নবুল অ্যান্ড অ্যাসারের বেস্পোক শার্ট এবং স্যুট পরা শাহরিয়ার টানেন ডেভিডফ সিগারেট এবং ব্যক্তিগত ক্লাবের সদস্যপদও আছে তার। এছাড়াও তার আরেকটি শখ আছে। আর তা হলো দামি দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি সংগ্রহ করা। তার সংগ্রহে থাকা বিভিন্ন দামি দামি ঘড়ির মূল্য ৩৯ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজারের (২.৫ মিলিয়ন পাউন্ডের উপরে) বেশি।

শাহরিয়ারের সংগ্রহে থাকা বিলাসী ঘড়ি

শাহরিয়ারের সংগ্রহে রিচার্ড মিল, পাটেক ফিলিপ, কার্টিয়ের, অডেমারস পিগুয়েট, রোলেক্স ইত্যাদির মতো বিরল ব্র্যান্ডের ঘড়ি রয়েছে। এমনকি বিশ্বের ঘড়ি সংগ্রহকারীদের মধ্যে শাহরিয়ার খুবই সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত এবং ফ্যাশন প্রকাশনাগুলো তার এই শখ ও তাকে নিয়ে ফিচারও করেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে তিনি পারিবারিক টেক্সটাইল ব্যবসা দেখাশোনা করেন।

অর্থ পাচারের সম্ভাব্য ইঙ্গিত

এখন প্রশ্ন হলো ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী শাহরিয়ার এবং শায়ান কী করে যুক্তরাজ্যের বিলাসী জীবনযাত্রার অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতা অর্জন করলেন। কারণ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ স্থানান্তরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধি-নিষেধ আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড অনুযায়ী, বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শ্রীলঙ্কায় কারখানা স্থাপনের জন্য ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানোর অনুমতিপত্র আছে। বিদেশে সম্পদ কিনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শায়ান এবং শাহরিয়ার কোনো অনুমতি নেননি। তার মানে হলো সেসব অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছিল। কারণ যুক্তরাজ্যে তারা এমন কোনো চাকরিতে যুক্ত ছিলেন না যেখান থেকে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ আসবে। তাই ওইসব সম্পদ কেনার অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

২০২২-২৩ অর্থ বছরের কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে বেক্সিমকো লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে শাহরিয়ারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়াও তিনি  বেক্সিমকোর বিস্তৃত টেক্সটাইল বিভাগের সমন্বিত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

শায়ান চলতি বছরের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ২.১১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা নিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল থেকে বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসেস ফ্যাশনের নামে ২৯১ কোটি ১৯ লাখ টাকার বেশি (২৪. ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়ায় ১৪ আগস্ট তাকে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে অপসারণ করা হয়।

বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধি হিসেবে আইএফআইসির বোর্ডে ছিলেন শায়ান। আইএফআইসি ব্যাংকে বাংলাদেশ সরকারের শেয়ারের পরিমাণ ৩২.৭৫ শতাংশ। আর হাসিনা সরকারের মন্ত্রী পদমর্যাদার অধিকারী শায়ানের বাবা সালমান এফ রহমানের ব্যাংকটিতে শেয়ার ছিল ২ শতাংশ। আর তা নিয়েই তিনি ২০১০ সাল থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

এদিকে, শাহরিয়ার-শায়ান এই দুই চাচাতো ভাই বেক্সিমকো লিমিটেড বা বেক্সিমকো ফার্মার পরিচালকের তালিকায় ছিলেন না। তাদের বাবারা এই দুই কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন।

কীভাবে অর্থের ব্যবস্থা হলো

ধারণা করা হচ্ছে, বিদেশে সম্পদ কেনার অর্থ তারা তাদের বাবাদের কাছ থেকে পেয়েছেন। তাদের কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর লাভ করেছে। তারপরও কোম্পানি থেকে তারা যে লভ্যাংশ পেতেন তা দিয়ে লন্ডন এবং সিঙ্গাপুরের মতো অতি উচ্চ ব্যয়বহুল শহরে জীবনযাত্রা পরিচালনা করতে পারতেন না। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনের শেষে বেক্সিমকো গ্রুপের কাছে জনতার দেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। যা ঋণদাতার পরিশোধিত মূলধনের প্রায় ৯৫০ শতাংশ—এবং যা খুব সহজভাবেই ব্যাংকটির একক-ঋণগ্রহিতার ঋণসীমা অতিক্রম করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জনতার কাছে বেক্সিমকোর বকেয়া ঋণের ৭২ শতাংশের মতো খেলাপি হয়েছে। সালমান এফ রহমান ছিলেন হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি জনতা ব্যাংকের বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপদস্থদের সহায়তায় ব্যাংকিং নিয়মকানুন উপেক্ষা করে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছিলেন।

জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অকপটে বলেছেন, বড় ধরনের ঋণ পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ অনুমোদনের জন্য তিনি (সালমান এফ রহমান) শেখ হাসিনা প্রশাসনে থাকা তার প্রভাব কাজে লাগিয়েছেন।

জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, শুধু তাই নয়, তিনি সবসময় ঋণ পুনঃতফসিল করতেন এবং বেক্সিমকো যাতে ব্যাংক খেলাপিদের সঙ্গে তালিকাভুক্ত না হয় সেজন্য সহজ শর্তাবলী পেতেন।

যেমন ব্যবসায়ীক এ গোষ্ঠীটি তার ঋণের একটি বড় অংশ ২০২২ সালের জুনে পুনঃতফসিল করে এবং বাকিটুকু গত বছরের জুনে করে। এই ঋণের বড় একটি অংশ খেলাপি হয়ে গেছে। তারপরও গত ৩০ জুলাই ব্যাংকের বোর্ড সভায় নতুন একটি পুনঃতফসি প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছিল। যদিও নথিপত্র বলছে, ওই প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনতা ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, এ কারণেই বেক্সিমকোর প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ খারাপ ঋণ হয়ে গেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী এবং রূপালীর শীর্ষ ঋণগ্রহিতাদের মধ্যেও বেক্সিমকো রয়েছে। শেয়ার মার্কেটে নিয়ম ভাঙায়ও সালমান এফ রহমান নিজের প্রভাব কাজে লাগান। যেমন প্রভাব খাটিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে শরিয়াভিত্তিক বন্ড সুকুক অনুমোদন করতেও তিনি সক্ষম হন।

বেক্সিমকো সুকুকের মাধ্যমে তার দুটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থায়ন এবং টেক্সটাইল বিভাগের সম্প্রসারণের জন্য তিন হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারের বিশেষ তহবিল থেকে সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়, যা পুঁজিবাজারের এক্সপোজার থেকে বাদ দেওয়া হবে। ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী, ব্যাংকগুলি তাদের মূলধনের ২৫ শতাংশ স্টকে বিনিয়োগ করতে পারে৷

এটিও সালমান এফ রহমানের কারসাজি বলে মনে করা হয়। এর মাধ্যমে তিনি আবারও নিজের প্রভাব খাটিয়ে নতুন ঋণ উপকরণের জন্য ক্রেতাদের অর্থায়ন করেন।

গাজীপুরের একটি অখ্যাত আবাসন প্রকল্প ছিল শ্রীপুর টাউনশিপ। শ্রীপুর টাউনশিপের অতীত কোনো ইতিহাস নেই। এমন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির জন্য বিএসইসির মাধ্যমে সালমান এফ রহমান এক হাজার কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন করিয়ে নেন।

শ্রীপুর টাউনশিপের সুবিধাভোগী ছিল বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই বন্ডের গ্যারান্টর ছিল আইএফআইসি ব্যাংক। স্বার্থের দ্বন্দ্বে প্রভাব খাটানোর সালমান এফ রহমানের এটি আরেকটি উদাহরণ।

গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বেক্সিমকোর দুটি বন্ডের অনুমোদন প্রক্রিয়াই খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

উল্লেখ্য, সালমান এফ রহমান একাধিক হত্যা মামলায় গত ১৩ আগস্ট থেকে পুলিশ হেফাজতে আছেন। সূত্র: বাংলা আউটলুক 

এই পোস্ট শেয়ার করুন:

এই বিভাগের আরো খবর

নামাযের সময়

সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৩৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:১২
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩৮
  • ১২:০৩
  • ৪:২৫
  • ৬:১২
  • ৭:২৬
  • ৫:৫০

বিগত মাসের খবরগুলি

শুক্র শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০