আজ ১০ ডিসেম্বর, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মানবাধিকার দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত করে। এ বছরের প্রতিপাদ্য—‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ এখনই’। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষায় ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দিবসটি উপলক্ষে দেশে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মানববন্ধন, আলোচনা সভা এবং মতবিনিময়সহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৬৯৯ জন। এ সময় গুম হয়েছেন ৬৭৭ জন এবং কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪৮ জন। এসব ঘটনার মধ্যে ক্রসফায়ার, নির্যাতনে হত্যা, রাজনৈতিক কর্মীদের গুম এবং গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের মতো ঘটনাও রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তথ্যমতে, বৈষম্য, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা, এবং অর্থনৈতিক-সামাজিক বৈষম্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রধান কারণ।
জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মানবাধিকার জন্মগত, সর্বজনীন এবং সবার জন্য সমান। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, মতপ্রকাশের অধিকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সমতা, নিরাপদ জীবনযাপন, এবং সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সুপারিশ পেশ করে। কমিশন জেলা পর্যায়ে মতবিনিময় ও কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মানবাধিকার রক্ষায় কেবল ঘোষণা নয়, প্রয়োজন কার্যকর আইনি ও সামাজিক উদ্যোগ।বিশ্ব মানবাধিকার দিবস স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একটি মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে সকলের জন্য অধিকার নিশ্চিত করাই ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রধান ভিত্তি।