নিউজ ডেস্ক:
বিশ্ববিদ্যালয় কোনো অবস্থাতেই বাণিজ্যকেন্দ্র নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা শিক্ষার্থীর মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো। তাদের মধ্যে এমন বোধ ও অনুভূতি সৃষ্টি করা যাতে তারা যেকোনো সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়ে ওঠে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘সিনেট অধিবেশন ২০১৭’ এর অভিভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বকীয়তা ও গুরুত্বের সঙ্গে অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের তুলনা চলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা একান্তভাবেই বিশেষায়িত ও উচ্চতর শিক্ষা। এ শিক্ষাকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়েও এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য, লক্ষ্য, ঐতিহ্য ও স্থায়িত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। দেশের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিই উচ্চশিক্ষার মূল লক্ষ্য। কিন্তু এ কালে সেই বোধ ও অবস্থান থেকে আমরা সরে এসেছি।
তিনি বলেন, বলতে গেলে বিশ শতকে আমরা দেখি, বিশ্বের সব প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পর্যন্ত বহু বিষয়ের সমন্বয় ঘটাতে শুরু করে। মানবিকতাবোধ ও নৈতিকতার চর্চাতো ছিলই, সেই সঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে অধ্যয়ন ও অনুশীলন করা হয়েছে কৃষিবিজ্ঞান, বাণিজ্য, আইন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার মান রক্ষা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে বা কোনো ধরনের দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দিলে তাতে যে ক্ষতি হবে তা সহজে পূরণ হবার নয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি বেরিয়ে আসে অদক্ষ পেশাজীবী গোষ্ঠী তাতে শুধু সমাজ নয়, জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসবে। সবচেয়ে ক্ষতি হবে নতুন প্রজন্মের, আগামী দিনের মানুষের।
উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত করার প্রয়োজনে অধিক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি সাধ্যাতীত হলে সে প্রলোভন থেকে দূরে থাকা শ্রেষ্ঠত্বের লক্ষণ উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের সে সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে যাদের আমরা উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারি। মানুষের ঝোঁক শুধু একদিকে নিবদ্ধ থাকে না। তা নানা দিকে ব্যপ্ত। কারো আগ্রহ তাত্ত্বিক জ্ঞান লাভে, কেউ ভালোবাসে সমাজসেবাকে, কারোর অনুরাগ সাংগঠনিক কার্যক্রমে। মনুষ্যত্বের বিচারে এসবের কোনো কিছুকেই খাটো করে দেখা যাবে না।
অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, কোষাধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার ড. এনামুজ্জামানসহ সিনেট সদসগণ উপস্থিত ছিলেন।