নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়া শিশু ফাতেমাকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার দম্পতির হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে শিশুটির ভরণপোষণের জন্য ব্যাংকে তার নামে ৫ লাখ টাকা এফডিআর করে কাগজপত্র আদালতে দাখিলের শর্তে শিশুটিকে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গতকাল বুধবার বিকাল ৫টার দিকে ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান নয় দম্পতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটির ‘বৈধ অভিভাকত্ব’ নির্ধারণ করেন।
গত ৮ জুলাই জর্ডান থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরার পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শিশু ফাতেমাকে রেখে যান জনৈক নারী। তিনি জর্ডানে গৃহকর্মী হিসেবে গিয়েছিলেন।
ওইদিন একই বিমানে পাশাপাশি আসনে জর্ডান থেকে ফেরেন জয়দেবপুরের স্বপ্না বেগম। তিনি বলেন, বিমানে তার পাশের আসনে পরিচয় হওয়া ওই নারী তার কোলে থাকা শিশুটিকে আমার কোলে দিয়ে বলেন, আপা আমার শিশুটাকে একটু রাখেন। ভেতরে মালপত্র রয়েছে, নিয়ে আসছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও সেই নারী আর ফেরেননি।
পরে বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদেরা কাছে ঘটনাটি জানালে তারা শিশুসহ স্বপ্নাকে বিমানবন্দর থানায় পাঠায়। ওইদিনই বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর শিশুটিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় গত ২৫ জুলাই ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান ফাতেমার প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ৯ আগস্টের মধ্যে শিশুটির প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার দিন নির্ধারণ করেন।
এছাড়া আদেশে প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে না পাওয়া গেলে শিশুটিকে নিতে আগ্রহী কোনো দম্পতিকে বাছাই করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার কথা জানানো হয়।
এরপর ৯ আগস্ট শিশু ফাতেমার প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে পায়নি উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক আবু সাঈদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের নির্দেশে বিমানবন্দরের ওই দিনের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এতে শিশুটির প্রকৃত বাবা-মাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শিশুটির বাবা-মা দাবি করে কেউও লিগ্যাল নোটিশও দেয়নি। এছাড়া শিশুটি হারিয়ে গেছে মর্মে বিমানবন্দর থানায় কেউও জিডিও করেনি।
ওইদিন শিশুটির অভিভাবকত্ব গ্রহণে নয় দম্পতি আদালতে আবেদন করেন। তবে এদিন আদালত শিশু ফাতেমার ‘বৈধ অভিভাবকত্ব’ নির্ধারণে সময় পিছিয়ে ১৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন।