নিউজ ডেস্ক:
রাক, রাকা, সিরিয়া, সিরত, লিবিয়া এই চার শহরে প্রধান ঘাঁটি ছিল মধ্যপ্রাচ্যের বহুল আলোচিত জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস)। তাদের সাফল্য দেখে বিভিন্ন দেশ থেকে যুবক-যুবতীরা আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ার পথে পাড়ি জমায়।
কিন্তু খুব বেশিদিন ঠেকেনি তাদের খেলাফতের ঝান্ডা। একে একে বিতাড়িত হয়েছে সব জায়গা থেকে। সবশেষ রাকা থেকে উচ্ছেদ হয়ে সিরিয়ায় সবচেয়ে শক্ত অবস্থান হারিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। ২০১৪ সালে রাকা দখল করে জঙ্গিরা শহরটিকে তাদের রাজধানীতে পরিণত করেছিল।
এখান থেকেই তারা বিদেশের মাটিতে হামলার পরিকল্পনা করত, এখানেই তারা সাধারণ নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ নির্যাতন চালাত। শত শত বিদেশি যোদ্ধা যেকোনো মূল্যে রাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু রাকার পতনের পর সেসব যোদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন প্রশ্ন হল এসব বিদেশি যোদ্ধার গেল কোথায়?
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরে অন্তত ৪০ হাজার ব্যক্তি আইএসের যোদ্ধা দলে যোগ দিয়েছিল। তাদের বিশ্বাস এসডিএফ রাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে জঙ্গিদের শীর্ষ কর্মকর্তারা রাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় শত শত জঙ্গি মারা পড়েছে এবং লড়াই যত চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগিয়েছে স্থানীয় জঙ্গিরা এসডিএফ ফোর্সে থাকা স্বজনদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। রাকার সিভিল কাউন্সিলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট যৌথভাবে আত্মসমর্পণের বিষয়টি দেখাশোনা করেছে।
স্থানীয়রা আত্মসমর্পণ করলেও শহরে অন্তত কয়েক শ বিদেশি যোদ্ধা রয়েছে বলে ধারণা করেছিল জোটবাহিনী। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে বিদেশি যোদ্ধার উপস্থিতি বা নিহত হওয়ার তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তবে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ১৩০ থেকে ১৫০ জনের বিদেশি একটি দল লড়াই শেষ হওয়ার আগে আত্মসমর্পণ করেছে। সংস্থাটির প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেছেন, ‘বিদেশিরা এক দিন আগে আত্মসমর্পণ করেছে। এই দলে সিরিয়ার বাইরের বেশ কিছু আরব দেশের পাশাপাশি ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ান দেশের যোদ্ধারা রয়েছে। ’
অন্য সব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি যোদ্ধারা দেইর এজোরে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পালিয়ে গেছে। তবে এসডিএফ কর্মকর্তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এসডিএফ মুখপাত্র তালাল সেলো বলেছেন, ‘যেসব যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেনি তারা হয়তো মারা পড়েছে। আমরা এখনো অভিযান চালাচ্ছি এবং স্লিপার সেলের খোঁজ করছি। সেখানে হয়তো তারা লুকিয়ে থাকতে পারে। ’
এদিকে জোট মুখপাত্র কর্নেল রায়ান ডিলন বলেছেন, আরো ১০০ যোদ্ধা গত দুই দিনে আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের মধ্যে চারজন বিদেশি ছিল তবে তারা কোন দেশের নাগরিক তা এখনো চিহ্নিত করা হয়নি। এসব যোদ্ধার পরিণতি কী হবে সে ব্যাপারে রায়ান পরিষ্কার করে কিছু জানাননি। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কাউকে আটক করে রাখিনি। আমাদের একটা বাহিনী রয়েছে যারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করবে তবে তারা এসডিএফের নিয়ন্ত্রণে থাকে।