নিউজ ডেস্ক:
বিদায় ২০১৬ সাল। কালের চক্রে এভাবেই একটি বছরের সমাপ্তি টানবে আজকের দিনের সূর্য। মহাকাল চিরতরে শুষে নেবে বিদায়ী বছরকে।
আজ শনিবার সূর্য অস্তমিত হওয়ার সাথে সাথে বিদায় হবে আরো একটি বছরের। আর তাই বিদায় বিগত বর্ষ! বিদায় ২০১৬। রাত পেরিয়ে কাল যে ভোরের সূর্যোদয় ঘটবে, তা নতুন বছরের। মানুষ যখন থেকে হিসাব করা শিখেছে, তখন থেকেই সে বুঝেছে, একটি মহাকাল তাকে পরিক্রম করছে। কালের ব্যাপ্তি সমগ্র সৃষ্টিজুড়ে। সময়কে আমরা কেউই গুরুত্বহীন মনে করতে পারি না। খ্রিষ্টাব্দের হিসাবে এখন রাষ্ট্র চলে। গোটা বিশ্বকে এখন অনেকেই ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ হিসেবেই ভাবতে ভালোবাসেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিদায়ী বর্ষ বলতে যেমন বেদনার সুর বেজে ওঠে, ঠিক একইভাবে নতুন বছরও সম্ভাবনার হাতছানি দেয়।
বিদায়ী ২০১৬ সালটি অনেক ক্ষেত্রেই ছিল ঘটনাবহুল। এ বছরে দেশের রাজনীতি ছিল নিস্তরঙ্গ। সাধারণত আন্দোলনমুখরতা বলতে যা বুঝায়, বাংলাদেশে তেমন কিছুই ছিল না। তবে বেশ কয়েকটি ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনকে প্রবলভাবে আলোড়িত করেছে। ২০১৬ সালেই গুলশানের হোলে আর্টিজানে হামলা, বছরজুড়েই উগ্রপন্থীদের নানা তৎপরতা, আওয়ামী লীগের রাজসিক কাউন্সিল আয়োজন, বিএনপির ঘরবন্দী-বৃত্তবন্দী রাজনীতি, চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর, রোহিঙ্গাদের ঘরছাড়া করা এবং তাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নিপীড়ন, রিজার্ভ চুরি, তনু-মিতু হত্যা, খাদিজার ওপর হামলা, সাঁওতাল পল্লী ও নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতন, নতুন পে-স্কেল ঘোষণা, ঈদের সময় সড়কে মৃত্যুর মিছিল প্রভৃতি ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনকে আলোড়িত করেছে। সুন্দরবনের কিনারে রামপালে কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। এ নিয়ে আন্দোলন থাকলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। আদালতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর রায় হয়েছে বছরজুড়েই।
বিদায়ী বছরে যা কিছু ঘটেছে, তা এখন সবই ধূসর অতীত। আসলে বহমান সময়ের স্রোতে বর্তমানে কোনো কিছুই স্থির থাকে না। তাই মানুষ ভবিষ্যৎমুখী এবং অতীতাশ্রয়ী। অতীত মানুষকে হাসি-কান্নায় গ্রোথিত করে। ভবিষ্যতের জন্য ভাবনায় ফেলে দেয়। বিদায়ী বছরজুড়ে বেদনার যে হাহাকার ছিল, না পাওয়ার যে ক্রন্দন ছিল; আগামী বছর সেই হাহাকার, সেই ক্রন্দন মুছে দিয়ে বয়ে আনবে প্রাপ্তির প্রাচুর্যÑ সেটাই প্রার্থনা।