চুয়াডাঙ্গায় শেষ হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, কমেছে তীব্র শীত
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় শেষ হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কমেছে তীব্র শীত, তবে বেড়েছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা, সহজেই আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিনই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা হাসপাতালগুলোতে রোটা ভাইরাসজনিত কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ভর্তি করা হচ্ছে। এক দিনেই ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৩ শিশু। এ ছাড়াও জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ১০০ ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেঝে, বারান্দা, রোগী ওঠানোর সিঁড়ি, এমনকি ওপারেশন থিয়েটারের সামনে পর্যন্ত রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৩৯ জন। এর মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ৩৩ জন শিশু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ছিল ৫১।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আয়েশা বেগম নামের এক শিশুর মা জানান, ৩ দিন আগে তাঁর মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। গত দুই দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে, কিন্তু ভালো হয়নি। তাঁদের গ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আরও দুই-তিনটি শিশুকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর অভিভাবক রোজিনা বেগম বলেন, হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয় তাঁর শিশুর। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কিছুটা ভালো হয়েছে। তবে বমি থামলেও কমেনি ডায়রিয়া।
হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অপর এক রোগীর বাবা বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এত রোগী তিনি আগে কখনো দেখেননি। ওয়ার্ডে জায়গা পাওয়া তো দূরের কথা, ওয়ার্ডের বারান্দা কিংবা সিঁড়িতেও জায়গা না পেয়ে তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারের সামনেই বিছানা পেতেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবির বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দুজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আছেন, এরপরও বাড়তি রোগীর কারণে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালে কলেরা স্যালইনের সরবরাহ আছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। এ জন্য কিছু কিছু রোগীদের স্যালাইন বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে, তবে খাবার স্যালাইন পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন বলেন, এই শীতে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। শিশুরা পাতলা পায়খানা ও বমি করা শুরু করলে দ্রুত তাদের হাসপাতালে আনার পরামর্শ দেন তিনি।