নিউজ ডেস্ক:
গত শুক্রবার বিকেল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলসদ্বীপের পাশে ঠাকুরান ও বিদ্যাধরীর সংযোগস্থলে ডিঙি নৌকায় বসেছিলেন তরুণ বদ্রু মল্লিক। ভাটার টানে পানি ধীরে ধীরে কমে আসছিল। বদ্রুর বাকি সঙ্গীরা চরে নেমে কাঁকড়া ধরছিলেন। হঠাৎ করে জঙ্গল থেকে বদ্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রকাণ্ড বাঘ পেছন থেকে বদ্রুর কাঁধে ক্রমাগত থাবা বসাতে থাকে। বাঘের নখের আঘাতে তখন বদ্রু মল্লিকের রক্তাত্ত অবস্থা।
শিকারকে ঘাড়ে চাপিয়ে বাঘ তখন গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আর বদ্রু চেষ্টা চালাচ্ছে বাঘের থাবা থেকে নিজেকে বাঁচতে। হঠাৎ বাঘের গর্জনে হকচকিয়ে যান বদ্রুর সঙ্গীরা। ক্রমাগত বাঘের থাবায় ক্ষতবিক্ষত বদ্রু লড়তে লড়তে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। কাঁকড়া ধরার দলে ছিলেন বদ্রুর বাবা সুবলও। ছেলেকে বাঘে ধরেছে দেখে আর স্থির থাকতে পারেননি তিনি। বদ্রুর বাবা–সহ ৬ জন নৌকায় থাকা লাঠি নিয়ে পাল্টা বাঘের দিকে ছুটে যায়। গভীর অরণ্যের দিকে তখন শিকার মুখে নিয়ে দৌড়চ্ছে বাঘ। বাঘের পিছু পিছু হাতে লাঠি নিয়ে ছুটছে ৬ জন।
একসময় বাঘকে আয়ত্তে পেয়ে লাঠি, লোহার শিক, রড দিয়ে ক্রমাগত আক্রমণ করতে থাকে বদ্রুর বাবাসহ অন্যান্যরা। এভাবে কয়েক মিনিট চলার পর বাঘ শিকার বদ্রুকে ছেড়ে জঙ্গলে মিলিয়ে যায়। প্রায় ৫ ঘণ্টা নৌকাযাত্রার পর রাতে জখম বদ্রুকে ভারতের পাথরপ্রতিমা হাসপাতালে আনা হয়। বদ্রুর মাথায় ও কাঁধে রয়েছে বাঘের নখের গভীর ক্ষত। সেই শুক্রবার রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। নিজের বাবার সাহসিকতায় এবারের মত প্রানে বেঁচে গেছে বদ্রু মল্লিক এ কথা স্বীকার করতেই হয়।