নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ এশিয়ার মধ্যে সেরা বলে মনে করেন বাংলাদেশ সফরত চীন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের প্রধান এবং বৈদেশিক বিষয়ক প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কাউন্সিল ফর প্রমোটিং সাউথ সাউথ কো-অপারেশনের (সিপএসএসসি) চেয়ারম্যান লিউ জিনহুয়া।
গতকাল রোববার ঢাকায় ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) কার্যালয়ে দু’দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সভায় তিনি এ অভিমত পোষন করেন।
লিউ জিনহুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবসায়ী, সরকার ও এখানকার মানুষ সবকিছু মিলিয়ে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকার বেশ বিনিয়োগ বান্ধব। আমরা এখানে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফর করছি। আমরা চাই এখানকার জ্বালানি, আবাসন, ইলেকট্রনিক্স, যোগাযোগ, প্রযুক্তি ও কৃষিসহ বৃহৎ সেক্টরে বিনিয়োগ করতে। কারণ, এখানকার বিনিয়োগ পরিবেশ ও সস্তা শ্রম বিনিয়োগের প্রধান আকর্ষন।
জিনহুয়া বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে চীনের ২০টি কোম্পানির ৪০ জন প্রতিনিধি এসেছেন। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হয়ে দেশে ফিরছেন তারা। এরাই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং বলেন, ‘বাংলাদেশে চীন সরকার প্রধানের সফরকালে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যেটা এখন বাস্তবায়নের সময় এসেছে। দুই দেশের ব্যবসায়িক উন্নতিতে কাজ করছে চীন। আমরা চাই বড় ধরণের বিনিয়োগ করতে। বর্তমানে চীনের জন্য বরাদ্দ অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগের জন্য আমাদের কর্মকাণ্ড চলছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। যেখানে চীনের বড় বড় বিনিয়োগ আসবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগী হতে চায় চীন। এ দুই দেশের মধ্যে কোনো ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বও নেই। ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ অনুকূল হওয়ায় এখানে ব্যবসা বাড়াচ্ছে চীন সরকার।’
চীনের ভিসা জটিলতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য ভিসা পাওয়া জটিল নয়। আরো সহজ করা হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে সরকার। চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এমন কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশ সফর করছে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এ বিষয়ে যোগাযোগ হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পে তারা বিনিয়োগ করতে পারে।’
বিনিয়োগ পরিবেশে কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ পরিবেশে কিছু কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’
এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সফরের সময় ৩৮০০ কোটি ডলারের ২৮টি চুক্তি করেছিল চীন সরকার। সেসব চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য এ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। এ দলে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা রয়েছেন; এরাই পরবর্তী সময়ে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি, লাইটিং, পোশাক ও বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে চীনের। ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ হওয়ায় এখাবে ব্যবসা বাড়াতে আগ্রহী তারা। সরকার দেশে আরো অধিক বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করতে সরকার ওয়ান স্টপ সার্ভিস অ্যাক্ট করতে যাচ্ছে। যা সংসদ থেকে আইন আকারে পাস করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিআইডিএ শক্তিশালী হবে।’
‘চীন-বাংলাদেশ বিজনেস মিটিং’ শীর্ষক এই সভা চীনা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করে এফবিসিসিআই। এতে চীন ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা যোগ দেন।