এক দিনের সফরে চুয়াডাঙ্গায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম রেডক্রস গঠিত হয় এ জেলায়। চুয়াডাঙ্গা থেকে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির যাত্রা শুরু হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের ডাক বিভাগ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার যাত্রা এই চুয়াডাঙ্গা থেকেই। তাই চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।’ গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আইসিটি কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জেলা আইসিটি কমিটির সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলার তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির বিষয় নিয়ে সব সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রতিমন্ত্রী। সভায় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে চুয়াডাঙ্গা খুব ছোট জায়গা হলেও ঐতিহাসিকভাবে এই চুয়াডাঙ্গা একটা বড় জায়গা দখল করে আছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকার ঘটনের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গাকেই প্রথম অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কেউ চাইলেও এই ইতিহাস অস্বীকার করতে পারবেন না। তবে বিভিন্ন নিরাপত্তাজনিত কারণে মেহেরপুরকে অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয় এবং মুজিবনগরের আ¤্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়।’
তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। জেলার সব ইউনিয়ন পরিষদ এবং গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে দ্রুতগতির ইন্টারনেট-সংযোগ। শিক্ষা, কৃষি, বাণিজ্যসহ সব রকম সুবিধা পাওয়া যাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। জনগণের সুবিধার কথা মাথায় রেখে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ২ হাজার সরকারি-সেবা অনলাইন ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। ঘরে বসেই যেন তরুণ-তরুণীরা আয় করতে পারে, সে লক্ষ্যে এ বছরেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। চুয়াডাঙ্গার মাটিতে গড়ে তোলা হবে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। ১০ বছরে ১০ লক্ষ তরুণ-তরুণীর কাজ করার সুযোগ হয়েছে আইটি সেক্টরে। আগামী ৪ বছরে আরও ১০ লক্ষ তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইনফো সরকার তৃতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেখ সামসুল আবেদিন খোকন, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম, আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা তাহের খান, ইনফো সরকার সেবাগ্রহীতা মেহের উদ্দীন, সেবাদাতা ইমরান হুসাইন, সরোজগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জুয়েল রানাসহ জেলার বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার উথলীতে ৪ দশমিক ৫ একর জমির ওপর শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার (হাইটেকপার্ক) নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।