নিউজ ডেস্ক:
পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। এই দিনে রঙিন হয়ে উঠেছিলো বরিশাল। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফুলের দোকান, রাস্তাঘাট, পার্কসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বসন্তপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়র দেখা গেছে। এই দিনকে ঘিরে দামও বেড়েছে বসন্ত উৎসবের অন্যতম উপকরণ ফুলের। বসন্তের আগমনী দিনটিকে স্মরণীর করে রাখতে বরাবরের মতো এবারও বসন্ত উৎসব-১৪২৩ এবং বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ঐহিত্যবাহী বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজে।
সোমবার সকাল ১০টায় সরকারি মহিলা কলেজের বকুলতলা আলোকায়ন মঞ্চে বসন্ত উৎসবের উদ্ধোধন করেন প্রধান অতিথি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে বসন্তবরণ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অতিথি ছিলেন সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর স.ম ইনামুল হাকিম, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শচীন কুমার রায়, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম সহ বিভিন্ন সরকারি কলেজের শিক্ষক এবং সরকারী কর্মকর্তারা।
আবৃত্তি, নাচ, গান, অভিনয় এবং ফ্যাশন শো’সহ নানা আয়োজনে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে শুধু কলেজের শিক্ষার্থী নয়, নিজ ক্যাম্পাসের বাইরের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও তাদের আত্মীয়-স্বজন এবং বিভিন্ন সরকারি কলেজের শিক্ষক এবং সরকারি কর্মকর্তারা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সবাই ছিলেন বাসন্তি সাজে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বাসন্তি উৎসব সরকারি মহিলা কলেজের ঐহিত্য। সারা বছর তারা এই দিনটির অপেক্ষায় থাকেন। অনুষ্ঠান উপভোগ করে আনন্দ পান। আবার বাইরের অনেক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও এসেছিলেন মহিলা কলেজের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে। তারাও অনুষ্ঠানে মুগ্ধ হন।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম এনায়েত হোসেন জানান, এ ধরনের অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে তিনি আনন্দিত এবং স্বার্থক। ঋতুরাজ বসন্ত শুধু ভালবাসাই টানেনা, এই উৎসবের মাধ্যমে সাংস্কৃতি চর্চারও উন্নয়ন হয়। সব কলেজেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, বসন্ত উৎসব বাঙ্গালী সাংস্কৃতির ঐহিত্য। এটি নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জানার জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসন্ত উৎসব আয়োজন করা দরকার। বসন্ত শুধুমাত্র প্রেম-ভালবাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এই বসন্ত পরিবর্তন, বিপ্লব এবং সংগ্রামের একটি অঙ্গীকার। বসন্তের মাসেই ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মনের মাঝে কোন অন্ধকার থাকলে এই বসন্ত উৎসবের মধ্য দিয়ে তাদের মন পরিষ্কার হয়ে যাবে। নতুন সূর্য আলোকিত করবে তাদের।
সরকারি মহিলা কলেজ ছাড়াও নগরীর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে ঋতুরাজকে স্বাগত জানানো হয়। সোমবার বেলা ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে একটি র্যালি বের হলে তাদের বাধা দেয় ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী কয়েক শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগকে না জানিয়ে র্যালির আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই র্যালিতে বাধা দেয় তারা। পরে তাদের সাথে সমঝোতা করে ছাত্রলীগকে সাথে নিয়ে র্যালির মাধ্যমে বসন্তবরণ করে তারা।
এছাড়া নগরীর জগদিশ সারস্বত স্কুল এন্ড কলেজে বিকেলে বসন্ত বরন উৎসবের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী। বসন্ত উৎসব এবং মঙ্গলবারের বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে বরিশাল নগরীর ঐহিত্যবাহী বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দুই দিনব্যাপী ফুল মেলার আয়োজন করেছে বরিশাল ফুল ব্যবসায়ীরা।