নিউজ ডেস্ক:
দেশের আমদানি রপ্তানির প্রধান দ্বার চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউজের সক্ষমতা কাঙ্খিত পর্যায়ে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, বন্দর ও শুল্কসংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বাড়তি সময় লাগছে। এ জন্য আমদানি-রপ্তানিকারকদের বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে। ফলে ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর অটোমেশন ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে জনবল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব সংলাপ চলাকালে ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন।
এ সময় ব্যবসায়ী নেতাদের পাশাপাশি, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বন্দরে নানা কারণে আমদানি করা মাল আটকে থাকে। পণ্য খালাসে বেশি সময় লাগছে। অথচ বাড়তি অর্থ গুণতে হয় আমদানিকারককে। রপ্তানিকারকেরা বন্দরের নেওয়া বাড়তি চার্জ আমাদের কাছ থেকে আদায় করে। ফলে ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যায়।’
জনবল সংকটের কথা তুলে ধরে চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম আখতার হোসেন শুল্কায়ন পদ্ধতি সহজ করার দাবি জানিয়ে বলেন, জনবলের অভাব রয়েছে। অথচ অতীতের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কন্টেইনার খালাস করতে হচ্ছে। অতীতে দিনে ১ হাজার বিল অব এন্ট্রি’র মামালাল খালাস করা হলেও বর্তমানে তা ৪ হাজারে উন্নীত হয়েছে। অথচ জনবল বাড়েনি। জনবল সংকট দূর করুন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এম মাহবুব চৌধুরী বলেন, এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি করা পণ্যের ৮০ শতাংশ তৈরি পোশাক। প্রতিনিয়ত রপ্তানি বাড়ছে। অথচ সেই একই লোকবল। এই লোকবল দিয়ে সরকার ঘোষিত ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি কীভাবে সম্ভব হবে?
এ সময় এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে পণ্য খালাসের সময় কমেছে। বর্তমানে আমদানি করা পণ্যের ৬৭ শতাংশ পণ্যের ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তিন দিনের মধ্যে ৭৭ শতাংশ পণ্যের পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পাঁচ দিনের মধ্যে এটি শতভাগ।
সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ ওঠে।এর আগে সকালে ইআরএফ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান এমন পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার কাজ নিয়ম মেনে ধীরে সুস্থে চলে। তবে এর গভীরতা থাকে অনেক বেশি। আমরা সমস্যার মূল উৎপাটন করতে চাই। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, তারা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আ জ ম নাসির উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আত্মপক্ষ সমালোচনা করার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য ফরিদ উদ্দিন, ড. মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আইভি হাসান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সৈয়দা সারোয়ার জাহান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার এ এফ এম আব্দুল্লাহ খান, ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।