খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্স আপ দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলের মধ্যে ট্রফি ও প্রাইজমানি বিতরণ করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফায়জুর রহমান পিপিএম (সেবা)। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসার আমানুল্লাহ আহমেদ।
এছাড়া পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরডিসি শেখ মো. রাসেল, এনডিসি সাইফুল ইসলাম সাইফ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহমান, নাইমা জাহান সুমাইয়াসহ শিক্ষনবিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন নিগার সিদ্দিক কলেজের ১৪ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সনজিত সরকার, সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার লাভ করেন ডা. আফসার উদ্দিন কলেজের ১২ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় নাহিদ হাসান এবং ম্যান অব দ্য ফাইনালের পুরস্কার লাভ করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ৭ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় আসিফ আহমেদ অন্তর।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, মাদক মুক্ত ও সামাজিক অবক্ষয় মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। এই টুর্নামেন্টে এ বছর ১১টি কলেজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। কমপক্ষে এই কলেজগুলোর ১১ গুণন ১১ = ১২১ জন যুবক খেলোয়াড় খেলায় অংশগ্রহণ করছে। এ খেলোয়াড়দের সাথে অতিরিক্ত খেলোয়াড়সহ কলেজের অনেক শিক্ষার্থী এই খেলা মাঠে বসে উপভোগ করছে। যে সময়টুকু তারা মাঠে বসে এই নির্মল আনন্দ উপভোগ করেছে, সেই সময়টুকু থেকে অন্তত তারা সমাজের যেকোনো খারাপ কাজ থেকে বিরত ছিল। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত খেলাধুলা করলে মাথায় খারাপ চিন্তা আসে না। আর খারাপ চিন্তা না আসলে মনন ও মেধা খাটিয়ে দেশের জন্য ভালো কিছু করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, ফুটবল পৃথিবীর সবচাইতে জনপ্রিয় খেলা। তাই ভালো ফুটবল খেলা যেখানে অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে দর্শক সমাগম ঘটে। আর এ খেলায় ভালো খেলতে হলে নিয়মিত চর্চা করতে হয়। আর এই আয়োজনটি যখন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে হয়, তখন এর উপকারিতা হয় চতুর্মুখী। কারণ নিয়মিত খেলাধুলা ও শরীর চর্চা শারীরিক-মানসিক বিকাশ ঘটায়। তাই লেখাপড়ার একঘেয়েমিতা রোধ করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের টুর্নামেন্টের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে একদিকে যেমন দেশের ফুটবল অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করছেন, তেমনি যুব সমাজকে নানা রকম অসৎ সঙ্গ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছেন।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে চ্যাম্পিয়ন চুয়াডাঙ্গার সরকারি কলেজের খেলোয়াড়দের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও ২৫ হাজার টাকার প্রাইজমানি তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণ। রানার্সআপ নিগার সিদ্দিক কলেজ মুন্সিগঞ্জের খেলোয়ারদের হাতে তুলে দেয়া হয় রানার্সআপ ট্রফি ও ১৫ হাজার টাকার প্রাইজমানি।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নিগার সিদ্দিক কলেজের অধ্যক্ষ আবু নাসির, কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আরশাদ উদ্দিন চন্দন, চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সেলিনা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা ডিএফএ’র সহসভাপতি সাবেক কৃতী ফুটবলার রেজাউল হক জোয়ার্দ্দার রেজা, ডিএফএ’র কোষাধ্যক্ষ নাসির আহাদ জোয়ার্দ্দার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য মহসিন রেজা, শফিকুল ইসলাম মালেক, রাশেদুল ইসলাম, রোকনুজ্জামান, সাবেক কৃতী ফুটবলার মিজানুর রহমান মানিক, নাজমুল হক শান্তি, আইয়ুব হোসেন, শহীদ হোসেন গুরখা, শহিদুল কদর জোয়ার্দ্দার, জেলা ফুটবল দলের সাবেক দলনায়ক সোহেল রানাসহ সাবেক, বর্তমান ও এ প্রজন্মের ফুটবল খেলোয়াড়গণ।
অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচটি পরিচালনা করেন শফিকুন্নবী রিয়ান লিটা হোসেন, হাফিজুর রহমান হাফিজ ও পারভেজ। ব্যাস কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রেজাউল হক জোয়ার্দ্দার রেজা। চ্যাম্পিয়ন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু ইয়াজিদ ও কোচের দায়িত্ব পালন করেন সুমন। এছাড়া খেলার মাঠে উপস্থিত হয়ে চুয়াডাঙ্গার সরকারি কলেজের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম শাহীন, মেঘনাথ রায় ও প্রভাষক আতাউল হক রাসেল।