কলম্বিয়া মোড় এলাকায় টিএনজেড গ্রুপের পাঁচ কারখানার শ্রমিকরা শ্রম মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন। শ্রমিকরা জানান, বৈঠকে আগামী রোববারের (১৭ নভেম্বর) মধ্যে এক মাসের বেতন এবং ২৮ নভেম্বরের মধ্যে বাকি বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানার ওসি রাহেদুল ইসলাম এবং শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন জানান, শ্রম মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
তবে, অবরোধ প্রত্যাহারের এক ঘণ্টা পরই শ্রমিকরা পুনরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা জানান, আলোচনার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া শ্রমিক প্রতিনিধিরা ফিরে না আসা এবং বেতন নগদ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তারা অবরোধ চালিয়ে যাবেন।
গত তিন দিনের অবরোধে গাজীপুর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের প্রভাব পড়ে সংযোগ সড়কগুলোতেও। বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। হাজার হাজার যাত্রী চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন এবং বিকল্প পথ ও বাড়তি ভাড়ায় যাতায়াত করতে বাধ্য হন। জানা গেছে, গতকাল দুপুরে গাজীপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া ঘটনাস্থল ভোগড়ার কলম্বিয়া মোড়ে যান।
প্রশাসনের উপস্থিতিতে দুপুরে শ্রম সচিব মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিয়ে শ্রমিকদের ছয় কোটি টাকার অনুদান এবং পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেন। এ সময় ২০ জন শ্রমিক প্রতিনিধি আলোচনার জন্য ঢাকায় যান। তবে, শ্রমিকরা প্রতিনিধি ফিরে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শ্রমিকরা জানিয়েছিলেন, তিন দিন ধরে মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করলেও তাঁরা যানবাহন ভাঙচুর বা ধ্বংসাত্মক কোনো কাজ করেননি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করে ঘরে ফিরবেন তাঁরা।
অবরোধের কারণে হাজার হাজার যাত্রী, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় নেমে হেঁটে অথবা বিকল্প পথে রাজধানী ঢাকায় যাত্রা করে। আর ঢাকা থেকে আসা উত্তরের জেলাগুলোর যাত্রীরা চন্দ্রা হয়ে বাইপাইল বা গাবতলী হয়ে যাতায়াত করেছে। এতে ভাড়া ও সময় লাগে বেশি। কিছু যানবাহন গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস দিয়ে এবং জয়দেবপুর থেকে বনমালা হয়ে টঙ্গী দিয়ে চলাচল করেছে।