নিউজ ডেস্ক: দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। প্রতি নামাজের পরে কিছু বিশেষ দোয়া, তাসবিহ ও জিকির রয়েছে। এগুলোর বিনিময়ে অনেক সওয়াব ও পুণ্য লাভ হয়। এসব দোয়া ও জিকির সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা এসেছে।
ফজর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ফজরের গুরুত্ব ও ফজিলতও বেশি। এ সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এছাড়াও ফজরের পর পড়ার মতো ফজিলতপূর্ণ অনেক আমল রয়েছে। যেগুলো পড়ে মুমিন বান্দা নানাবিধ উপকার লাভ করতে পারে। পাঠকদের জন্য কয়েকটি আমল উল্লেখ করা হলো-
আয়াতুল কুরসি পাঠ করা
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনও অন্তরায় থাকবে না, (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ২৩৯৫)।’
আয়াতুল কুরসি (আরবি) :
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
উচ্চারণ : আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কায়্যুম লা তা’খুজুহু সিনাতুওঁ ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিস্ সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল্ আরদি, মান জাল্লাজি ইয়াশফাউ ইনদাহু ইল্লা বি ইজিনহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খলফাহুম, ওয়ালা ইউহিতুনা বিশাইয়িম্ মিন ইলিমহি ইল্লা বিমা শা-আ। ওয়াসিআ কুরসিয়্যুহুস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদা, ওয়ালা ইয়াঊদুহু হিফজুহুমা,ওয়াহুওয়াল আলিয়্যুল আজিম। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৫৫)
আরও পড়ুন : ফজর নামাজ পড়তে না পারলে করণীয়
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে দোয়া
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা তিনবার নিম্নের দোয়া পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে সন্তুষ্ট করবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮৯)।’
দোয়াটি হলো (আরবি) :
رَضِيتُ باللهِ رَبَّاً، وَبِالْإِسْلَامِ دِيناً، وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيَّاً
উচ্চারণ : রাজিতু বিল্লাহি রাব্বাওঁ ওয়াবিল ইসলামি দ্বিনাওঁ ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা।
অর্থ : আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বিন হিসেবে ও মুহাম্মাদ (সা.)-কে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট।
রোগব্যাধি থেকে রক্ষার দোয়া
রোগব্যাধি থেকে হেফাজতের জন্য নবীজি (সা.) নিম্নের দোয়াটি পড়তেন।
আরবি :
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুজামি, ওয়া মিন সাইয়্যিল আসকাম।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই শ্বেত, উন্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সব দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে, (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৫৪)
আরও পড়ুন : যে ৪ কাজ ছেড়ে দিলে ফজর নামাজ পড়তে পারবেন
সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করা
ইয়াহইয়া ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-স্বস্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে, সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে।’ (আহকামুল কোরআন লিল-কুরতুবি : ২/১৫)
এছাড়াও সুরা ইয়াসিন পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। প্রতিদিন সকালে সুরা ইয়াসিন পড়তে পারি আমরা।
জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া
হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিবের পর সাতবার নিম্নের দোয়াটি পাঠ করে এবং ওই দিনে বা রাতে তার মৃত্যু হয় তাহলে সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৭৯)
দোয়াটি (আরবি) হলো :
اللهم أجرني من النار
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্ নার।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করুন।