নিউজ ডেস্ক:
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নকল ও প্রশ্নফাঁস মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা শেষ করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। আগের চাইতে এবার আমরা আরও কঠোর অবস্থানে রয়েছি। প্রশ্নফাঁস বা তার গুজব ছড়ালে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়বে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এমন ন্যক্কারজনক কাজের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে কেউ রেহাই পাবে না।আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।
প্রশ্নফাঁসের গুজবকারী কয়েকজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, যারা ফেসবুকসহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ওপর নজরদারি বসানো হয়েছে। দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করবে।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই এবারও প্রশ্নফাঁস ও নকলমুক্ত পরীক্ষা হোক। এখন পর্যন্ত ভালোভাবেই হচ্ছে। কোথাও কোনও নেতিবাচক খবর পাইনি। আমি আবারও বলছি, গত বছর কোনো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। এ বছরও সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। এবার আরও জোরদার করা হয়েছে যেন প্রশ্নফাঁস না হয়। তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো অপচেষ্টার প্রমাণ পেলে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আশা করি দেশের কোথাও কেউ এ ধরনের অপেচষ্টায় যুক্ত হবেন না। যদি কেউ অপচেষ্টায় যুক্ত হয়েছেন এমন তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। অভিভাক, শিক্ষক ও পরীক্ষার্থী কেউ কোনো ধরনের অপপেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হবেন না। চাহিদা না থাকলে প্রশ্নফাঁস করার কোনও আগ্রহ থাকবে না। কাজেই সবাইকে এটা পালন করতে হবে।’তিনি বলেন, আমরা যেসব নির্দেশনা দিয়েছিলাম তার সবকটি অনুসরণ করা হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নবাক্স খোলা হয়েছে। সারাদেশে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারে মোড়ানো প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে। দেশের সকল স্থানে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত কোথাও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।তিনি বলেন, যদি প্রশ্নফাঁস হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ হয়, আমরা সেই পরীক্ষা বাতিল করে দেব, কোনো দ্বিরুক্তি হবে না। কিন্তু আপনারা বুঝেন, ফেসবুকে এমন ভুয়া ঘোষণাও আসে, আউট হয়ে গেছে। সাড়ে ২০ লাখ ছেলেমেয়ের পরীক্ষা আবার নেওয়া, তাদের দুঃশ্চিন্তার বিষয় চিন্তা করেন।এ কারণে যদি প্রমাণ হয়, ফাঁস হয়েছে, তা হলে আমরা পরীক্ষা বাতিল করে দেব, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে কোনো পরীক্ষা হবে না। শিক্ষা বোর্ডসহ শিক্ষা প্রশাসনে বছরের পর বছর কর্মকর্তারা বদলি হচ্ছেন না, এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিষয়টা দেখব।’প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।দেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ পরীক্ষা চলবে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ২৪ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।এবারের পরীক্ষায় মোট ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন। এবার আটটি সাধারণ বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ লাখ ১০২ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৩ লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন এবং কারিগরি ভোকেশনাল ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৯ জন রয়েছে। মোটে কেন্দ্রের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৭ এবং প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৮ হাজার ৬৮২টি। এছাড়া বিদেশি আটটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪৩৪ জন্য পরীক্ষার্থী রয়েছে।