নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার এক বিরাট অংশ পেপটিক আলসারে ভুগছে। এমনকি বেশ কিছু কিশোর-কিশোরীও পেপটিক আলসারে আক্রান্ত। এ রোগের শুরু, এর তীব্রতা ও নিরাময় সবকিছুর সাথেই খাদ্য গ্রহণ ও প্রাত্যহিক জীবনপ্রণালী খুব নিবিড়ভাবে জড়িত। তাই খাদ্য উপাদান ও খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন হলে রোগীর ভোগান্তি কমানো সম্ভব হবে।
এ কথাটি প্রতিষ্ঠিত যে, পেপটিক আলসারের রোগী উঠতি বয়সের খাদ্য গ্রহণে বেশ অনিয়ম করেছেন বা উদাসীন ছিলেন। যেমন সকালে নাস্তা করতে খুব দেরি করা, দুপুরের খাবার গ্রহণেও অনিয়মÑ কোনো দিন ১টায় তো অন্য দিন সাড়ে ৪টায়; রাতের খাবার গ্রহণেও যথেষ্ট সময়ের ব্যবধান করে থাকবেন। তার চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ হলো পেপটিক আলসারে প্রারম্ভ সহায়ক খাদ্যদ্রব্যের প্রতি প্রবল আগ্রহ। ধূমপান তার মধ্যে প্রথম স্থানীয়। ধূমপান শুধু এ রোগের শুরুতেই অবদান রাখে না, ধূমপান এর তীব্রতা বাড়ায় এবং ওষুধ সেবনে সেরে উঠতেও যথেষ্ট দেরি করায়। ধূমপান ক্ষুধা কমায়, যা আবার পেপটিক রোগকে ত্বরান্বিত করে। এর পর আছে বিভিন্ন প্রকার তেলেভাজা খাবার (যেমন বেগুনি, পেঁয়াজু, মুড়ি, আলুর চপ, বড়া ইত্যাদি) এবং অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া। মরিচের ঝালের সাথে আদার ঝালও দোষী। আমাদের প্রচলিত আনুষ্ঠানিক খাবারদাবারও (যেমন পোলাও, বিরিয়ানি, কাবাব, গ্রিল করা মুরগি, ফাঁপা রুটি ইত্যাদি)। পেপটিক আলসারের তীব্রতা বাড়ায়। যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরী বা বালক-বালিকাদের মাঝে ফাস্টফুডজাতীয় খাবারের প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখা যায়।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান পেপটিক আলসারের ঘটনার পেছনেও এর ভূমিকা কম নয়। টকজাতীয় খাবার (অ্যাসিড আছে) যেমন-ফুসকা, চটপটি, আচার, চাটনি ইত্যাদি যে পেপটিক আলসারের ক্ষতিকর তা এগুলো খাওয়ার সাথে সাথেই বা কিছু পরেই বোঝা যায়। মদ্যপানও কিছুটা ক্ষতিকর। বেশি ঝালযুক্ত খাবার এবং গরম খাদ্যদ্রব্য আক্রান্ত লোকের অবস্থা যেকোনো সময় খারাপ করে দিতে পারে। দুধ-চা হলো আরেকটি ঝুঁকিপূর্ণ খাবার। কফি তো বটেই। কোল্ডড্রিংকস নামে যেসব পানীয় দেদার বিক্রি হচ্ছে তা সরাসরি এসিড এবং পেপটিক আলসারের প্রত্যক্ষ কারণ। তবে লিকার চা কম ক্ষতিকর। ডালের মধ্যে মসুর ডাল কিছুটা অম্লবর্ধক। শুকনো খাবারগুলো অনেক সময়ই পেপটিক আলসার বাড়ায়। ঠাণ্ডা ও কম শক্ত খাবার পেপটিক আলসারের খাওয়া উচিত।