নিউজ ডেস্ক:
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী পৃথিবীর সব সম্পদের মালিক আল্লাহ। মানুষ এ সম্পদের ব্যবহারকারী হলেও মালিক নয়। আল্লাহ মানুষকে ধন-সম্পদ দেন। আল্লাহ প্রদত্ত ধন ধনী এতটুকুই ভোগ করতে পারবে যতটুকু তার হক রয়েছে। সে ধনে গরিবের যে হক রয়েছে, তা ভোগ করার অধিকার সে রাখে না। এ সম্পদ গরিবের হাতে পৌঁছে দেওয়া ধনীর অবশ্য কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। যা জাকাত নামে পরিচিত। জাকাত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। তবে তা সবার জন্য ফরজ করা হয়নি। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির জন্যই জাকাত আদায় ফরজ। পবিত্র কোরআনে সালাত কায়েমের নির্দেশের পাশাপাশি জাকাত আদায়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সঞ্চিত সম্পদের একটি অংশ গরিব আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও অন্যদের কাছে বিলি করাই হলো জাকাত। জাকাত শুধু রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতদের ওপর নয়, আগের নবী ও রসুলের শরিয়তেও ফরজ করা হয়েছিল। তবে বিভিন্ন নবীর আমলে জাকাতের কোনো কোনো খুঁটিনাটি বিষয়ে ভিন্নতা ছিল। ধনীদের জন্য জাকাত দেওয়া ফরজ। এটি গরিবদের প্রতি ধনীদের দয়া-দাক্ষিণ্য নয়। জাকাত হলো ধনীদের সম্পদে গরিবের হক। পবিত্র কোরআনে নামাজের পাশাপাশি জাকাত আদায়ের ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সূরা তাওবার ৩৪ ও ৩৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে— ‘যারা সোনা-রুপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদের কঠোর শাস্তির কথা শুনিয়ে দিন। সে দিন এসব সোনা-রুপা জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তাদের ললাটে, পিঠে ও পার্শ্বদেশে দগ্ধ করা হবে, আর বলা হবে এগুলো সেসব সম্পদ, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিল। সুতরাং তোমরা তোমাদের জমা করা সম্পদের স্বাদ গ্রহণ কর।’ রসুল (সা.) বলেছেন, সোনা-রুপার অধিকারী যে ব্যক্তি তার হক আদায় করে না অর্থাৎ শরিয়ত নির্দেশিত অংশ (জাকাত) দেয় না, কেয়ামতের দিন তাকে আগুনের বিছানা পেতে দেওয়া হবে। (বোখারি, মুসলিম ও নাসায়ি) আল্লাহ জাকাত আদায়কারীর সম্পদ বৃদ্ধি করেন। জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র হয়। তাই ইহজাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণের স্বার্থে জাকাত আদায় আমাদের অবশ্য কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।
লেখক : ইসলামী গবেষক