ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মনোবলে এখন কোনো ধরনের ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমার পুলিশ সদস্যদের মনোবলে এখন ঘাটতি নেই। আমরা পূর্ব অবস্থায় ফেরত গেছি এবং আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা যে একটা ট্রমা অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলাম তার জন্য আমরা ঐকান্তিকভাবে চেষ্টা করেছি এবং এই চার-পাঁচ মাস পর আমার অফিসারদের মনোবল অনেক ভালো। এখন আর কোনো ধরনের সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, ঢাকাবাসীর কাছে আমার অনুরোধ থাকবে আমরা এরকম কর্মকাণ্ড (আতশবাজি, পটকা ও রকেটবোমা ফোটানো) থেকে বিরত থাকি। তাদেরকে ভাবতে হবে আমরা বাসার ছাদে যে কর্মকাণ্ডটি করি সেই বাসার নিচ তলায় হয়তো ৮০ বছরের কোনো বৃদ্ধ মানুষ অনেক কষ্টে সেই সময় ঘুমানোর চেষ্টা করছেন। অথবা তিনি কেবলই ঘুমিয়ে পড়েছেন। আপনার বিকট শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে আরও অনেক কষ্ট পায়। আমাদের প্রত্যেককে এটি ভাবতে হবে। হাসপাতালের পাশে এমন শব্দ হলে হাসপাতালে থাকা মুমূর্ষু রোগীরা কষ্ট পায় ——। এ ধরনের পরিবেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পুলিশ অথবা পরিবেশ মন্ত্রণালয় যথেষ্ট নয়। এ জন্য ঢাকাবাসীর প্রত্যেক নাগরিক বা নগরবাসীর দায়িত্ব আছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনার দায়িত্ব আছে আপনার গাড়ির চালক যত্রতত্র এইরূপ হর্ণ বাজান কিনা, আপনার চালক ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালান কিনা। ড্রাইভারকে গাইড করার দায়িত্ব ওই গাড়ির প্যাসেঞ্জারের। তিনি মনে করেন গাড়িতে থাকা যাত্রীদের দায়িত্ব হল চালক যেন যত্রতত্র হর্ণ না বাজান।
গত এক সপ্তাহ ধরে আতশবাজি, পটকা, রকেট বোমা, ক্লাসটার ইত্যাদি যাতে নববর্ষ উপলক্ষে ব্যবহারিত না হয় সেজন্য ডিএমপি অভিযান চালাচ্ছে জানিয়ে কমিশনার আরও বলেন, অভিযানে ১৭২ কেজি বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব উদ্ধারের ঘটনায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। এছাড়া পাঁচজন গ্রেফতার হয়েছে।
কমিশনার জানান, আজ ঢাকায় বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পরিবেশ অধিদফতর সারাদিন-সারারাত কাজ করবে।
কমিশনার আরও জানান, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নববর্ষ পালিত হলেও আতশবাজি ও পটকা ফোটানোর কাজটি একটি নির্দিষ্ট স্থানে হয়। উদাহরণ টেনে অস্ট্রেলিয়ার সিডনী শহরের কথা বলেন তিনি। সেই শহরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে এমনটি করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মতো সেই দেশের ছাদে ছাদে আতশবাজি ও পটকা ফোটানোর মতো ঘটনা ঘটে না। এ বছর সম্ভব হয়নি পুলিশের পক্ষে কিন্তু সামনে বছর থেকে ঢাকা শহরে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে এসব আয়োজন পালন করা যাবে তা ঠিক করে দেবে পুলিশ।