স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুরে জিয়া খালের জায়গা দখল করে খালের মাঝ দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মান করছেন তুষার সিরামিক নামের নির্মানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। তারা ইতিমধ্যে খালের অনেকটা জায়গা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে নিয়েছে, বাকি কাজও দ্রুত গতিতে ঘিরে ফেলার কাজ চলচে।
স্থানিয়রা বলছেন, এই খাল বন্ধ হয়ে গেলে বর্ষা মৌসুমে তাদের এলাকার দুইটি গ্রামের বাড়িঘর ও সেই গ্রামের বৃহত দুইটি মাঠের ফসল পানিতে ডুবে যাবে। এ ব্যাপারে তারা প্রতিবাদ করলেও ওই কোম্পানীর লোকজন তাদের কথা শুনছেন না। সরকারি জমি এভাবে দখল করা হচ্ছে, বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় একটি খাল, অথচ সরকারি কোনো লোক এ ব্যাপারে কোনো ভুমিকা রাখছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের মহেশপুর উপজেলার পুরন্দপুর নামক স্থানে বেশ কিছু চাষযোগ্য জমি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। স্থানিয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পি.এন্ড.পি নামের একটি কোম্পানী ওই স্থানে ৯০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। তারা সেখানে একটি টাইলস তৈরীর কারখানা প্রতিষ্ঠা করবেন।
ইউসুফ আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, সড়াতলা আর পুরন্দপুর মাঝ দিয়ে হাইওয়ে সড়কের ধার ঘেষে এই খালটি চলে গেছে মহেশপুরের কপোতাক্ষ নদে। খালটি শতাধিক ফুট চওড়া। এটা সুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে গেলেও বর্ষা মৌসুমে তাদের দুই গ্রামের সমস্ত পানি কপোতাক্ষে নিয়ে যায়। ফলে তাদের গ্রাম ও মাঠ দুটোই জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পায়। মাঠে ঠিকমতো ফসল ফলে।
একই গ্রামের আজাহার আলী জানান, খালের উপরের জমি ক্রয় করেছে তুষার কোম্পানী। কিন্তু একমাস হলো তারা সীমানা প্রাচীর নির্মান করতে গিয়ে খাল দখল করে নিচ্ছে। খালের আনুমানিক ৭০ ভাগ তারা সীমানা প্রাচীরের মধ্যে নিয়ে ফেলেছে, বাকি আছে ৩০ ভাগ। এখন দখলকারীরা মাটি দিয়ে ভরাট করলে খালটি আর থাকলো না।
তাহলে সড়াতলা আর পুরন্দপুর গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে। তাদের এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে, মাঠের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাবে। তারা এই প্রাচীর নির্মান কাজ খাল ছেড়ে করার জন্য অনুরোধ করেছেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের কথা মানছেন না। এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তুষার সিরামিক নির্মান কাজের ব্যবস্থাপক বাবলুর রহমান এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তারা যে পর্যন্ত প্রাচীর দিচ্ছেন সেটা ব্যক্তি মালিকানার। সরকারি কোনো খাল তারা দখল করেননি। প্রাচীরের বাইরে খাল রয়েছে।
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশাফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি শোনার পর তিনি সার্ভেয়ার পাঠিয়েছিলেন। খালের জায়গা দখল করে প্রাচীর নির্মান করছে এটা ঠিক, তবে সেটা সওজ এর জায়গায়। কোনো ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় নয়।
তিনি আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খাঁন জানান, তিনি বিষয়টি জানতেন না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। এটা সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।