বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদারের দূর্নীতির বেড়াজালে আটকে পড়ে আছে ঝালকাঠি শতভাগ বিদ্যুতায়ন

রিপোর্ট : ইমাম বিমান: ঝালকাঠিতে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অসাধু কিছু ঠিকাদারদের দূর্নীতির বেড়াজালে আটকে পড়ে আছে ঝালকাঠি জেলার শতভাগ বিদ্যুতায়ন। এর আগেও ঝালকাঠি পল­ী বিদ্যুতের কতিপয় অসাধু কিছু ঠিকাদারের বিরুদ্ধে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসংখ্য গরীব পরিবারের কাছ থেকে অসৎ উপায়ে অর্থ আত্বসাতের সংবাদ প্রকাশ হলেও দূর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও স্থানীয় কতিপয় প্রতারক চক্রের দূর্নীতি থামছেনা। গত ১৭ মার্চ শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি সদর উপজেলার ১নং গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে শতভাগ বিদ্যুতায়নের শুভ উদ্ভোধন করলেও ২০১৬ সালে পাস হওয়া (লট নম্বর ১৬/০৪৬) লাইনের খুটি দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশেই পড়ে আছে । পল­ী বিদ্যুতের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তুবা এন্টার প্রাইজের সত্তাধীকারী ঠিকাদার আতিকের গাফেলাতিতে ইউনয়নের বীরমহল গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে বেশকিছু পরিবার। অপর দিকে শিমুলেশ্বর গ্রামের কয়েকজন গ্রাহক প্রায় দেড় মাস আগে মিটার পেলেও বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত। এ বিষয় ঐ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত জাহাঙ্গীর মৃধা জানান, দেড়মাস আগে আমার ঘরে মিটার দেছে কিন্তু কারেন্টের লাইন জ্বলে না, কবে পামু জানিনা। কিছুদিন আগে নবগ্রাম ব্রীজের পশ্চিমপাড় বাজর কমিটির সভাপতি শাহাআলম ঝালকাঠি পল­ী বিদ্যুৎ সমিতির কম সাহেবেরে ফোন দিলে সে দ্রুত ব্যবস্থা নিবে বললেও ৭ দিন অতিবাহিত হলেও ব্যবস্থা হয়নি।

অপর দিকে নবগ্রাম ইউনিয়নে ঘুরে কয়েক স্থানে তার বিহীন শুধু খুটি দেখা যায়। নবগ্রাম ইউনিয়নের খাদৈক্ষিরা গ্রামে দুই মাস আগে খুটি স্থাপন করা হলেও আজও পর্যন্ত তার বিহীন অবস্থায় পড়ে আছে খুটি। ঐ খুটির আওতাধীন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রত্যাশী স্থানীয় বাসিন্দা সরোয়ার হোসেন জানান, ২০১৬ সালে আমাদের লট পাশ হয় যার নম্বর ১৬/২৩১ প্যাকেজ নং-২০৩/৪ প্রায় দেড় বছর পড় খুটি আসে। প্রায় তিন মাস আগে আমাদের লাইনের খুটি স্থাপন করা হয়েছে কিন্তু তাও আবার তারবিহীন, কবে যে কারেন্টের দেখা পাবো জানিনা। একই অবস্থা দেখাযায় নবগ্রাম বাজারে কেন্দ্রীয় জামে মসজীদ সংলগ্ন মাদ্রাসা ভবনের পিছনের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে— তারবিহীন দুটি খুটি পড়ে আছে। ঐ খুটি দিয়ে প্রায় ১০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এনে দু’মাস আগে খুটি স্থাপন করা হলেও তারবিহীন অবস্থায় আজও পড়ে আছে। একই অবস্থা পাওয়া যায়, একই ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের জৈনক শহীদ সরদারের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে ঠিকাদার আতিকের ভাই তারেক শহীদের স্ত্রীর কাছ নতুন লাইন করে কারেন্ট দেবার কথা বলে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। এ বিষয় শহীদের স্ত্রী জানান, আতিকের ভাই তারেক শিমুলিয়া গ্রামে নতুন লাইন নির্মান করতে আসলে আমার বাড়িতে কারেন্ট পৌছে দেবার কথা বলে ৫ হাজার টাকা নেয়। টাকা নেয়ার বছর খানেক পর স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগীতায় তারেকের ভাই আতিককে বললে সে তিনটি খুটি স্থাপন করে। খুটি স্থাপন করা হলেও তাতে কোন তার না দিয়ে আতিক তার লোকজন নিয়ে চলে যায়। আতিককে ফোন দিলে সে আমার খুটির জন্য কোন তার অফিসে বরাদ্ধ হয়নি বলে এড়িয়ে যায়। বরাদ্ধ হয়নি নতুন সংযোগ দেয়ার নামে চলছে নিরব চাদাবাজি। ঝালকাঠিতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় নেয়ার সংবাদে ঠিকদাররা যেন আকাশের চাদ হাতে পেয়েছেন। যে কারনে প্রায় বছরখানেক সময় ধরে ঝালকাঠি সদর উপজেলা সহ দুই উপজেলার হাজার হাজার পরিবারের কাছ থেকে ঠিকাদার চক্রটি স্থানীয় অর্থলোভী স্বার্থন্নাসী দালালদের সহযোগীতায় সর্বনিন্ম ২ হাজার থেকে সর্বচ্চো ১০হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিলেও বিদ্যুতের দেখা মিলছেনা এখন পর্যন্ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝালকাঠি পল­ী বিদ্যুৎ সমিতির অনুমোদিত একজন ইলেট্রিশিয়ান জানান, ঠিকাদারদের লাইন নির্মান কাজ শেষ হলে সংযোগ দেয়ার আগে ট্রান্সফরমার আনা বাবদ খরচ দাবী করে, আর সেই খরচ না দিলে তারা অফিসের বিভিন্ন অযুহাত দেখায়। কিছুদিন পূর্বে বিদ্যুৎ অফিসে ট্রান্সফরমার আনার জন্য শিমুলিয়া এলাকার নতুন লড চালু করতে আবুল হোসেন নামে একলোক পল­ী বিদ্যুৎ সমীতিতে যায়। সেখানে ট্রান্সফরমার নিজেদের লোক দ্বারা বহন করে গাড়িতে উঠালে লেবার এসে টাকা দাবী করে। টাকা না দেয়ায় আবুল হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। অপর দিকে ঠিকাদারদের সাথে নির্মান (নিপর) বিভাগের কতিপয় অসাধু কিছু অংকনকারীর যোগসাজগে লাইন নিমার্নের ছক করতে গিয়ে অর্থের বিনিময় লাইন নির্মানের ছক সহ সহজ উপায়ে সঠিক লাইনের ছক না করে দু-একজন গ্রাহকের বাড়ি বাদ রেখে স্টাকিংশটি তৈরী করে। স্টাকিংশীটের আওতার বাহিরে থাকা গ্রাহকের কাছ থেকে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময় খুটি স্থানানন্তর করে নতুন লাইন করে সংযোগ দিয়ে থাকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আতিক।

এ বিষয় ঝালকাঠি পল­ী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী এমদাদুল হকের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ঠিকাদারের গাফেলাতির কারনেই এ সমস্যা গুলো হয়ে থাকে । তবে আমরা এই সমস্যা গুলোর দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করে সমাধন করবো বলে আশ্বাস দেন।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular