রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫

পর্নো ছেড়েছেন সেই ‘অক্টোমাম’?

নিউজ ডেস্ক:

তার প্রকৃত নাম নাতালি সুলেমান। দুনিয়া তাকে চেনে ‘অক্টোমাম’ হিসেবেই।  ‘অক্টো’ অর্থে আট, আর ‘মাম’ তো মা। কেন এই পরিচিতি? কারণ ২০০৯ সালে এক সঙ্গে আটটি সন্তান জন্ম দিয়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। আর গর্ভধারণের সময় তিনি এক বিবাহবিচ্ছিন্না তরুণী। অর্থাৎ, কোন পুরুষ সঙ্গীর সাহায্য ছাড়াই আট সন্তানের মা হয়েছেন এই নাতালি।

বিষয়টি শুনতে যতই আজগুবি লাগুক না কেন, এটাই সত্য। ১৯৯৬ সালে মার্কিন এই নারীর বিয়ে হয় মার্কো গুতিরেজের সঙ্গে। ২০০৬ সালে ডিভোর্স হয়ে যায়। মার্কো নাতালিকে কোনও সন্তান দিতে পারেননি। সেটাই ছিল তাদের বিচ্ছেদের প্রধান কারণ। আনুষ্ঠানিক ডিভোর্সের অনেক আগে থেকেই দু’জনে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন। সেই সময় থেকেই ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ), অর্থাৎ সাধারণ ভাবে যাকে টেস্ট টিউব বেবি বলা হয়, সেই পদ্ধতিতে মা হওয়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন নাতালি। ১৯৯৭ সালে, নাতালির বয়স যখন ২১, সেই সময় থেকেই ডাক্তার মাইকেল কামরাভার তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। পরবর্তী বছর ছ’য়েকের মধ্যে ছ’টি সন্তানের (চারটি ছেলে দু’টি মেয়ে) জন্ম দেন নাতালি।  

২০০৮ সালে জানা যায়, আগের আইভিএফ চিকিৎসার পরিণামে নাতালির গর্ভে ছ’টি ভ্রূণ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়ে গেছে। নাতালি ভ্রূণগুলিকে তার জরায়ুতে সঞ্চারিত করার জন্য অনুরোধ করেন ডাক্তারকে। সঙ্গে যুক্ত হয় আরও দু’টি নতুন ভ্রূণ। সব মিলিয়ে ২০০৯ সালে মোট আটটি সন্তানের জন্ম দেন নাতালি। আমেরিকার মাটিতে সুস্থ এবং জীবিত অক্টোপ্লেটস-এর জন্ম দেওয়ার ঘটনা এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ঘটে।

এর পরেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে চলে আসেন নাতালি। কিন্তু সকলের অভিনন্দনের জোয়ারে যে তিনি ভেসে যাচ্ছিলেন, এমনটা নয়। আমেরিকায় সরকারি নিয়ম অনুসারে, অনাথা সিঙ্গেল মায়েরা সরকারের কাছ থেকে সন্তানের মাথা পিছু একটা ভাতা পান। যখন সংবাদে প্রকাশ পায় যে, নাতালি বেকার এবং চোদ্দটি সন্তানের জননী, তখন শুরু হয় বিতর্ক। সন্তানের জন্ম দিয়ে নাতালি আসলে নিজের রুটি-রুজির বন্দোবস্ত করছেন এবং সাধারণ করদাতাদের পকেট থেকে অর্থ খসাতে চাইছেন- এমন বক্তব্য তুলে ধরে প্রতিবাদে সরব হন অনেকেই। নাতালির সন্তানধারণের কেস স্টাডি করার পরে, মেডিকেল বোর্ড অফ ক্যালিফোর্নিয়া ডাক্তার কামরাভার লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তার বিরুদ্ধে রোগীকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার অভিযোগ ওঠে।

এর পর কেটে গেছে সাত বছর। অনেক ঝড়ঝাপটা বয়ে গেছে নাতালির উপর দিয়ে। নিজের সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য পর্ন ফিল্মে পর্যন্ত অভিনয় করতে হয়েছে নাতালিকে। বহু পত্রপত্রিকায় খবর হয়েছেন নাতালি। তাকে নিয়ে হয়েছে ডকুমেন্টারি। তবে এখন নিজের চোদ্দ ছেলে মেয়েকে নিয়ে সুখেই আছেন তিনি। সরকারি সাহায্যেই চলছে সংসার।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular