নিউজ ডেস্ক:
নামাজে অনেক সুন্নত রয়েছে। তাই যেভাবে মনে চায় সেভাবে দাঁড়ানো যাবে না।
কারণ দাঁড়ানোটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, বরং আমি এক মহান সত্তার আদেশ পালনার্থে দাঁড়িয়েছি। আমি যদি আমার ব্যক্তিগত কাজে দাঁড়াতাম, তাহলে যেভাবে মনে চায় সেভাবে দাঁড়াতে পারতাম। আর্মিরা যখন প্রশিক্ষণের জন্য লাইনে দাঁড়ায়, তখন কি তারা নিজ ইচ্ছামতো দাঁড়ায় নাকি যিনি তাদের কমান্ড করেন তার নির্দেশ মতো দাঁড়ায়? অনেক সময় দেখা যায়, কেউ যদি বলেন, কাতার সোজা করে দাঁড়ান, তাহলে তার ওপর চটে যান এবং বলেন যে, আপনি ঠিকমতো দাঁড়ান, আমি ঠিকই দাঁড়িয়েছি। চটে যাওয়ার কারণও আছে, যিনি সোজা দাঁড়াতে বলেন, তিনি কথার মধ্যে এমন আমিত্বভাব প্রকাশ করেন যে, মাসয়ালা তিনি একাই জানেন আর কেউ জানেন না। মোটকথা নামাজে দাঁড়ানোটা নিজ ইচ্ছা কিংবা ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, বরং আমরা যখন আল্লাহর সামনে দাঁড়াই, তখন আল্লাহপাকের নির্দেশ ও নবীজীর তরিকা মোতাবেক দাঁড়াতে হবে। এতে যদি ভুল হয়ে যায়, আর যদি কেউ অনুগ্রহপূর্বক ভুল ধরিয়ে দেন তাতে আরও খুশি হওয়ার কথা। এ অবস্থায় তার প্রতি চটে যাওয়া মোটেই ঠিক নয়। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, আমি চা পান করছি। চায়ের পেয়ালায় মাছি পড়ে আছে। কিন্তু আমি তা দেখিনি, এ অবস্থায় আমার চাকর যদি আমাকে তা বলে দেয়, তাহলে কি আমি তার ওপর রাগ হব নাকি তার প্রতি খুশি হব? কাতার সোজা করে না দাঁড়ানো মানে নামাজে মাছি পড়ে যাওয়া, কেউ যদি সতর্ক করে দেয়, তাহলে খুশি হওয়া উচিত। নামাজের কাতার সোজা করে না দাঁড়ালে পরস্পরে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন— ‘তোমরা যখন নামাজে দাঁড়াও সমান হয়ে দাঁড়াও, অন্যথায় আল্লাহতায়ালা তোমাদের অন্তরে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দেবেন। ’কিছুদিন আগে জনৈক ব্যক্তি আমাকে বললেন হুজুর! আমাদের ইমাম সাহেবকে কিসে ধরেছে বুঝলাম না! আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন? তিনি কি বলেন? তিনি উত্তরে বললেন, আমাদের ইমাম সাহেব প্রত্যেক নামাজের সময় বলে থাকেন, কাতার সোজা করুন এবং তিনি আমাদের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। আরও কিছু বাড়তি কাজ তিনি করে থাকেন। সুতরাং অনুগ্রহপূর্বক আপনি একদিন আমাদের মসজিদে আসবেন। আমি তাকে বললাম, আমি আপনাদের মসজিদে গেলে ইমাম সাহেবকে বলব, তিনি যেন এক মিনিটের স্থানে তিন মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে কাতার সোজা করান। কারণ নামাজে কাতার সোজা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কাতার সোজা করার পর নামাজ শুরু করা ইমামের বড় দায়িত্ব, যতক্ষণ পর্যন্ত কাতার সোজা না হবে, ইমাম সাহেব ততক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এটাই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ কিন্তু অনেক সময় এ হাদিসের পর পুরোপুরি আমল করা সম্ভব হয় না।