নিউজ ডেস্ক:
গ্রীষ্মের রৌদ্দুর উত্তাপ গায়ে মেখে রক্তিম ফুলে সেজেছে পাহাড়। টুকটুকে লাল, কমলা, হলুদ ফুলের সংমিশ্রণের নতুন রূপে প্রকৃতি হয়েছে একাকার। এখন পাহাড় জুড়ে বসেছে নানা ফুলের মেলা। গাছে গাছে ফুটেছে রঙিন কৃষ্ণচূড়ারা। প্রকৃতি যেন সেজেছে এক নতুন সাজে। লাল, হলুদ, গোলাপি, সাদা, বেগুনি হরেক রঙের ফুলে সেজেছে আকাঁ-বাঁকা পাহাড়ের পথ-প্রান্তর। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে হরেক রঙের ফুলের সমারোহ রঙ ছড়িয়ে হয়েছে নানা বর্ণময়।
চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ বিরল। তাই তো যুগে যুগে ফুল নিয়ে গান, গল্প কিংবা কবিতা লিখেছেন বলতে গেলে সব সাহিত্যিকই। পার্বত্যাঞ্চলে প্রায় সব মৌসুমে ফুলের দেখা মেলে। আর এসব ফুল শুধু স্থানীয়দের নয়, আকৃষ্ট করেছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদেরও। এসব ফুলের সৌরভে মাতোয়ারা পাহাড়।
সরজমিনে দেখা গেছে, রাঙামাটির প্রায় প্রতিটি সড়কে কৃষ্ণচূড়া ফুলের দেখা মিলছে। তার মধ্যে শহরের ফিনারি বাঁধ, রাজবন বিহার, রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাদুঘর এলাকা, সদর উপজেলা সড়ক, সুখীনীলগঞ্জ, কাপ্তাই-আসামবস্তী সড়ক, ডিসি বাংলো এলাকায় বাহারি রঙের ফুলে বৈচিত্র্যময়তা সৌভা পাচ্ছে। এসব ফুলের চোখ ধাঁধানো রূপ দেখেই বোঝা যায় প্রকৃতিতে জেঁকে বসেছে গ্রীষ্ম।
একই সাথে সৌন্দর্য বাড়াতে হাজির হয়েলে-স্বর্ণাভ হলুদ সোনাইল বা বান্দরের লাঠি এবং বেগুনি রংয়ের মনোমুগ্ধকর জারুল, রাধাচূড়া, কুরচি, গুস্তাভিয়া, কাঠগোলাপ, ডুঁলিচাপা, উদয়পদ্ম, পাদাউক, মধুমঞ্জুরী, পেল্টোফোরাম, কমব্রেটাম, পালাম বা পালান, লাল বা গোলাপি সোনালু, নাগেশ্বর, হিজল, লাল ঝুমকো লতা, জ্যাকারান্ডা আরও অনেক নাম নাজানা রঙিন ফুল। এসব ফুলে সৌরভ ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ের প্রতিটি প্রান্তে। শোভা পাচ্ছে পাহাড়ের বন জঙ্গলেও। গ্রীষ্মের এমন খরতাপেও প্রকৃতির এ রূপ দেখে অনুভব হয় এক পশলা শান্তি।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা শানিং হিল। এ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক মো. আলী বলেন, পাহাড়ের রয়েছে অপার সৌন্দর্যের ভাণ্ডার। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্রীষ্মের হরেক রঙের ফুল। রাঙামাটি শহরের সড়কের আশেপাশে কৃষ্ণচূড়া, স্বর্ণাভ হলুদ সোনাইল, জারুল ফুলের গাছগুলো দেখতে অসাধারণ। এসব ফুলের বৈচিত্র্যতা রাঙামাটি শহরকে আরও বেশি আকর্ষর্ণীয় করেছে। বিশেষ করে রাঙামাটি ফিশারি বাঁধ এলাকায় এখনো বেশ কয়েকটা ফুলের গাছ রয়েছে। এসব ফুলের গাছগুলোর কাপ্তাই হ্রদের উপর এ বাঁধের সৌন্দর্য্য আরও অনেকগুণ বেড়ে যাবে। তবে এসব গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে এ সৌন্দর্য্য চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। এতে করে স্থানীয়রা যেমন প্রশান্তি পাবে, তেমনি পর্যটকরাও মুগ্ধ হবে।