নগদ টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। সাম্প্রতিক সময়ে নগদ অর্থের প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও সংকট পুরোপুরি কাটেনি। বিশেষ করে এসএমই ব্যবসায়ী ও বিদেশগামীরা বেশি বিপাকে রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, জমা রাখা বড় অঙ্কের টাকা একসঙ্গে উত্তোলন করতে পারছেন না অনেকেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে চাহিদামতো অর্থ না পাওয়ায় ওই ব্যাংকগুলোর হিসাবধারী ব্যবসায়ীরা ও উদ্যোক্তারা সংকটে পড়েছেন। প্রয়োজনমতো অর্থ তুলতে না পারায় ব্যবসার পরিচালন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনকি এসব ব্যাংকে এলসি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। সংকটের কারণে তাদের গ্যারান্টি দিচ্ছে না বিদেশি ব্যাংকগুলো।
এ প্রসঙ্গে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রথীন্দ্র নাথ পাল বলেন, ‘আমাদের কিছু ডিস্ট্রিবিউটর আছে, যাদের টাকা আটকা পড়েছে। তাদের একটু ঝামেলা হচ্ছে। যারা ব্যাংকে বেশি টাকা রাখে না, তাদের ক্ষেত্রে খুব একটা চাপ নেই। তারা নিয়মিত আমাদের পণ্য কেনে, বিক্রি করে ও টাকা দেয়। মূলত ডিফল্ট ব্যাংকে যাদের হিসাব ছিল, তারা টাকা তুলতে পারছে না।’
রাজধানীর পান্থপথে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু গ্রাহক স্বল্প পরিমাণের টাকা উত্তোলন করছেন। তবে একই ব্যাংকের অন্য শাখায় চাহিদামতো টাকা দেওয়া হচ্ছে না। কাউন্টার থেকে বলা হয়, অনলাইন সেবা বন্ধ থাকায় টাকা দেওয়া হচ্ছে না।
এই ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে মো. জুয়েল নামের এক গ্রাহকের। তিনি একটি জুয়েলার্সের মালিক। তিনি জানান, ‘সব সময় এই ব্যাংকে ১৪-১৫ লাখ টাকা জমা থাকে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ১২ লাখ টাকা ধাপে ধাপে তুলে ফেলি। সব টাকা একসঙ্গে পাইনি। কয়েকবার চেক নিয়ে আসতে হয়েছে। সময় নষ্ট করতে হয়েছে। এই টাকা তুলে নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। আরো দুই লাখ টাকা আটকে আছে, যা ধীরে ধীরে তুলছি।’
কোহিনুর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের স্বত্বাধিকারী সালাউদ্দিন মাহমুদ জানান, ‘এরা প্রায় এক বছর ধরে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। আর গত সরকারের পতনের পর এটা আরো বেড়েছে। বেশ কয়েকবার এই ব্যাংকে টাকা তোলার জন্য গিয়েও পাইনি।’