নিউজ ডেস্ক:
কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের অধীনে ২৮ বছর পর সেমিফাইনালে পা দিয়েছে ইংল্যান্ড, তাদের লক্ষ্য: ৫২ বছর পর আসরের ফাইনালে আবার পা রাখা।
১৯৬৬ সালে প্রথমবার ফাইনালে পা রেখেই বিশ্বকাপ ফুটবলে তাদের একমাত্র শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া দ্বিতীয়বারের মত পা রেখেছে আসরের সেমিফাইনালে।
এ পর্যন্ত সেরা ফরোয়ার্ড হিসেবে ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন রয়েছেন চলতি বিশ্বকাপে সবার চেয়ে এগিয়ে, ৬টি গোল করেছেন তিনি।
গোল্ডেন বুটের দৌড়ে তার একমাত্র নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বেলজিয়ামের রোমেলু লুকাকু – তাও তিনি রয়েছেন দু’গোল পিছিয়ে।
বিপরীতে ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ চলতি আসরে দু গোল করেই দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। অন্য দুই ফরোয়ার্ড মারিও মানজুকিচ ও আন্তে রিবিক দুজনেই করেছেন একটি করে গোল দলের হয়ে।
তবে যেটুকু খেলেছেন চলতি বিশ্বকাপে এই দুই ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড তাতেই তারা নজর কেড়েছেন ফুটবল ভক্তদের, আর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে বাধ্য করেছেন প্রতিপক্ষ শিবিরকে।
ইংলিশদের ফরোয়ার্ড লাইনআপে হ্যারি কেন ছাড়াও মার্কাস রাশফোর্ড, ড্যানি ওয়েলবেক, রাহিম স্টার্লিং,আর জ্যামি ভার্ডিরা রয়েছেন, তবে এখনো বিশ্বকাপে কোনো গোলের দেখা পাননি এরা কেউ।
তাই হয়তো নিজেদের সেরাটা দেয়ার এখনো বাকী বলে, ম্যাচের আগে মনে প্রশান্তি খুঁজে ফিরছেন ইংলিশ সমর্থকরা।
অন্যদিকে ২০১৭ সালে যখন জ্লাতকো দালিচের ঘাড়ে পরে জাতীয় দলের দায়িত্ব, তিনি খুব সম্ভবত সবচাইতে মধুর সমস্যায় পড়েছিলেন দুই মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ ও ইভান র্যাকিটিচকে নিয়ে।
দুজনেই খেলেন একই পজিশনে তার ওপর লা লিগায় বার্সেলোনা ও রেয়াল মাদ্রিদের মত দুই বড় ক্লাবে। সেই সমস্যার সমাধানে কোচ মদ্রিচকে দিয়ে খেলালেন ১০ নম্বর পজিশনে।
সেক্ষেত্রে গেল ম্যাচে রাশিয়ার বিপক্ষে নিজেকে প্রমাণ করেছেন এই মিডফিল্ডার পরিসংখ্যানের হিসাবে। যেখানে গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পুরো ম্যাচে ৬২ বার বল পায়ে নিয়ে ৪২টি সফল পাস দিয়েছেন, ঠিক সেখানে রাশিয়ার বিপক্ষে ১৩৯ বারের ছোঁয়ায় ১০২ বার সফল হয়েছেন র্যাকিটিচ।
ইনজুরিতে দল থেকে ছিটকে গেছেন ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার সিমে ভার্সালকো।
তবে কিছুটা হলেও দলের জন্য স্বস্তি: নিষেধাজ্ঞা পেতে গিয়েও ফিফার কাছ থেকে মৌখিক সতর্কতা পেয়ে সেমিফাইনালের ছাড়পত্র পেয়ে গেছেন ডিফেন্ডার ডোমাগোজ ভিদা।
কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়াকে হারানোর পর নিজেদের জয়কে ইউক্রেনের জয় বলে খেলার মাঝে রাজনীতি নিয়ে আসায় সেমিফাইনাল খেলা নিয়ে সংশয় ছিল এই ডিফেন্ডারের।
এই নিয়ে আটবারের মত মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দুই প্রতিপক্ষ। এর আগের সাত দেখায় অবশ্য ইংল্যান্ডের পাল্লাটা ভারী বেশী।
ইংলিশদের চার বারের বিপরীতে ক্রোয়েশিয়া জিতেছে দুটি ম্যাচ। আর ড্র হয়েছে একটি।
বড় কোনো আসরে একবারই মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। ২০০৪ সালে ইউরোতে সেবার ওয়েইন রুনি জোড়া গোলে জিতেছিল ইংল্যান্ড।
তবে চার বছর পরেই ওয়েম্বলিতে সেটার প্রতিশোধ নেয় ক্রোয়েশিয়া ২০০৮ ইউরো বাছাইপর্বে ৩-২ গোলে ইংলিশদের হারিয়ে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় করে।
দুই দলের সামনেই সমান সুযোগ।
ফ্রান্সে ১৯৯৮এর বিশ্বকাপের পর এই প্রথম সেমিতে ওঠা ক্রোয়েশিয়া চাইবে না তাদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মত ফাইনালে ওঠার হাতছানি উপেক্ষা করতে।
বিপরীতে ৫২ বছরের অপেক্ষা আর ২৮ বছর পর আবারো নিজেদের চেনা মঞ্চে এসে জেফ হার্স্ট, ববি মুর, ববি চার্লটনদের মত ইতিহাসে অমর হয়ে থাকার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইবেন না হ্যারি কেন, ডেলি আলি, জেসি লিনগার্ড, বা মার্কাস রাশফোর্ডরা।