নিউজ ডেস্ক:
দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৬২তম দিন পর্যন্ত এই ভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা সাড়ে ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৬ লাখ ৮০ হাজার ১৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৮৯ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৬ হাজার ৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৪১৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৫ দশমিক ০৬ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ২১ শতাংশ কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৪ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২৮ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৪৪৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৬৬ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৮৩ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ১৮৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮১ দশমিক ০৭ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১ শতাংশ বেশি ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ২৬৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৪০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৯৭৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ১৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৬ হাজার ৫৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৪১টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৬৫৩ দশমিক ৯৮ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২১৫৪ দশমিক ২২ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৭ দশমিক ৮৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩২ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৯৫৫ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪৯৩ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩১ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৯ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫১ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৫ জন; যা ২ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪০ জন; যা ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৮৬ জন; যা ১২ দশমিক ১৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৮৩ জন; যা ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৪১২ জন; যা ৫২ দশমিক ৯২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন এবং রংপুর বিভাগে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৪২২ জন; যা ৫৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৪২ জন; যা ১৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৯৪ জন; যা ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮৮ জন; যা ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১৫ জন; যা ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৩ জন; যা ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৯২ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩২ জন; যা ২ দশমিক ০৫ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৫৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৩৩৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৯০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ২০৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৬৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২০টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৪২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬২২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪২টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪২৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯০৭ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৫২১টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০৩ জন এবং খালি আছে ২৫২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬২৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৭টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ২৬৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬৯৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮২ জন, রংপুর বিভাগে ৪২ জন, খুলনা বিভাগে ৩৩ জন, বরিশাল বিভাগে ২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩১ জন, সিলেট বিভাগে ২৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯০৪ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮৭৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ১৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৫৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৮৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৮২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৫৪৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৩৪৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৩১ হাজার ৮০৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৮২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২১৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৯টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ১২৪টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ২৪৯ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৬২ হাজার ৬৪১ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৪ লাখ ২১ হাজার ৫৩৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৬৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৮১ জন এবং ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ২১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।