নিউজ ডেস্ক:
দেশীয় শিল্পকে উপেক্ষা করে একক উৎস থেকে ড্রেজিং মেশিনসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করার উদ্যোগের অভিযোগ তুলেছে জাহাজ নির্মাতা সংস্থাগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট অরিয়েন্টেড শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ (এএওএসআইবি)। সংস্থাটি দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
সংগঠনের সভাপতি ড. আবদুল্লাহেল বারী এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিআইডব্লিউটিএ- এর ড্রেজার ক্রয়ের পুনঃদরপত্রে অধিকতর প্রতিযোগিতা বা বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কারিগরি যোগ্যতা পরিবর্ধনের আবেদন জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বিআইডব্লিউটিএ ২০০০ কোটি টাকা মূল্যমানের ড্রেজার ক্রয় প্রকল্পের আওতায় ১০টি ড্রেজার, আনুষঙ্গিক জলযান, পাইপলাইন, ফ্লোটার, বলজয়েন্ট ও হোজ ইত্যাদি অসামঞ্জস্য সরঞ্জামাদি ও মিশ্রনে বড় প্যাকেজ ব্যবহার করে এ সংক্রান্ত যোগ্যতার শর্তসহ দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে একক যোগ্য বিবেচিত দরপত্র গ্রহণ ও কার্যাদেশ দিয়েছে। পিপিএ-২০০৬ ও পিপিআর-২০০৮ এর বেশ কয়েকটি পালনীয় ধারার ব্যত্যয় ঘটলেও পুনরায় বিআইডব্লিউটিএ একই হুবহু দরপত্র দলিলের ভিত্তিতে ১০টি ড্রেজার ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে মাত্র একজন দরদাতা অংশগ্রহণ করে কিন্তু যোগ্য বিবেচিত একক দরপত্রের উপর ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারেনি। বিআইডব্লিউটিএ পুনরায় একই হুবহু দরপত্র দলিলের ভিত্তিতে পুনঃদরপত্রের আহ্বান করেছে।
যুক্তি দেখিয়ে এএওএসআইবি সভাপতি বলেছেন, দেশে কমপক্ষে দুটি শিপইয়ার্ড ইউরোপসহ বর্হিবিশ্বে বিভিন্ন দেশে উচ্চ আন্তর্জাতিক মানদ- নিরীক্ষিত কন্টেইনার জাহাজ, যুদ্ধ জাহাজ, অফশোর হাইস্পিড পেট্রোল ভেসেলের মত নৌ-যান রপ্তানি করেছে। এই শিপইয়ার্ড দুটির কাজের গুনগতমান, অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা এবং শিপইয়ার্ডে অনুসৃত নির্মাণ পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। শিপইয়ার্ড দুটির ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের ড্রেজার বানানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক আগে আহুত দরপত্রে এবং বর্তমানে আহুত পুনঃদরপত্রে সুকৌশলে অপকৌশল অলম্বনে সংযোজিত যোগ্যতার শর্তের কারণেই দেশের এই সর্ববৃহৎ অভিজ্ঞ শিপইয়ার্ড দুটি অংশগ্রহণ করতে পারেনি এবং পারছে না। সংযোজিত কুটিল শর্তাদির কারণে এই দরপত্রে বিদেশী সুপরিচিত ড্রেজার নির্মাতারাও অংশ নিতে পারেনি। ফলে ১টি মাত্র গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত দরপত্রের ভিত্তিতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে এবং সুনিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতেও একই প্রক্রিয়ায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে ব্যক্তি বিশেষের জন্য অবাধ লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হতে পারে। এতে করে দরপত্র আহ্বানের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্থাৎ উচ্চতর গুনের ক্রয় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হতে বাধ্য।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ড্রেজার নির্মাণ, কারিগরি দিক বিবেচনায় উচ্চতরমান সম্পন্ন জাহাজ নির্মানের তুলনায় অনেকাংশেই সরল ও সহজ। ড্রেজার এক বা একাধিক পন্টুন এনে ইঞ্জিন, বালি টানার পাম্প এবং কাটার সংযোজনে তৈরী। নিজে সচল নয় বিধায় এর নির্মাণ কৌশল জাহাজ নির্মাণের চেয়ে সহজতর। ড্রেজার ডিজাইনে বা এর সংযোজনে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিদেশী ড্রেজার নির্মাতা নিয়োগের বাধ্যতামূলক শর্ত সংযোজনের ফলে বাংলাদেশের ড্রেজার নির্মাণ শিল্প ও প্রক্রিয়া বিদেশীদের নিয়ন্ত্রণে রয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় সব ধরনের কুট কৌশল এবং ষড়যন্ত্র অতিক্রম করে যোগ্য এবং দেশীয় জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিআইডব্লিউটিএ-এর ১০টি ড্রেজার সংগ্রহের দরপত্রে যাতে অংশ নিতে পারে তার পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।