সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির সহিংসতার ঘটনায় গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) তদন্ত কমিটির সদস্যরা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা পরিদর্শন করেছেন। তারা দুপুরে দীঘিনালায় পৌঁছান। লারমা স্কোয়ারে নেমে সহিংসতার ঘটনায় পুড়ে যাওয়া বাজার পরিদর্শন করেন। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ি বাঙালি ব্যবসায়ীদের সাথে।
পরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা করা হয়। সেখানে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী, হতাহত পরিবারের সদস্য, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
এ সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, দীঘিনালার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় কমিটির প্রধান সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, পাহাড়ে পাহাড়ি, বাঙালি সবাই শান্তি চায়। এলাকার শান্তি, সম্প্রতি যাতে বজায় থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সেজন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে।
সভা শেষে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, দীঘিনালা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কয়েকজনের জবানবন্দি নেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটির সহিংসতার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তদন্ত কমিটির তথ্য জানানো হয়। কমিটিতে প্রধান করা হয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীকে। এছাড়া, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল, রাঙামাটির পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন এবং বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনকে সদস্য করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের নিউজিল্যান্ড পাড়ায় গণপিটুনিতে মো. মামুন নামে এক যুবক নিহত হয়। মামুনকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে পরদিন বিকেলে দীঘিনালায় সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলের একপর্যায়ে দীঘিনালার লারমা স্কয়ার বাজারে দুর্বৃত্তের গুলির ঘটনায় এলাকায় পাহাড়ী-বাঙালির মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। আগুন দেয়া হয় লারমা স্কোয়ার বাজারে। এতে পুড়ে যায় পাহাড়ি-বাঙালির শতাধিক দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার নানা গুজব ছড়িয়ে পড়লে সহিংসতায় রূপ নেয়।
এ ঘটনার জেরে খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আহত হন কয়েকজন।