দিনাজপুর প্রেসক্লাবে দিঘন সিআইজি সমবায় সমিতি লিঃ এর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে

0
25

এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি ঃ “বিদেশী বীজ নয়, দেশীয় বীজকে সুরক্ষা প্রদান”র শ্লোগান নিয়ে এবং আবাদের ক্ষেত্রে কৃষকদের বিদেশী উচ্চফলনশীল ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত না করে, বেশী বেশী দেশী ফসল উৎপাদনের লক্ষে উন্নতমানে দেশী বীজতলা ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেছে দিঘন সিআইজি সমবায় সমিতি লিঃ দিনাজপুর।
দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সোমবার সকালে এমটিসিপি-২ বাংলাদেশের সহযোগীতায় ও দিঘন সিআইজি (ফসল) সমবায় সমিতি লিঃ আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মমিনুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয়,বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আবাদী জমিতে দেশী ফসল উৎপাদনের প্রবনতা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে যা আমাদের কৃষির জন্যে শুভ লক্ষন নয়।
মমিনুল ইসলাম জানান, বিদেশী সার, বীজ ও কীটনাশকের অবাদ ব্যবহারের কারনে আমাদের জমির উর্ব্বরাশক্তি যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনি নষ্ট হয়েছে ফসলের স্বাদ ও গন্ধ। মাঠের সার ও কীটনাশক ধুয়ে নদীতে পড়ে নষ্ট করছে মাছের আবাদ। তাই দেশীয় বীজ সংরক্ষনের জন্যে কৃষকদের মারিয়া মডেল পদ্ধতির প্রশিক্ষন দেয়া দরকার তাহলে কৃষকেরা নিজেরাই বীজ সংরক্ষন করতে পারবে,এছাড়াও দিঘন সিআইজি সমবায় সমিতি দেশী বীজ সংরক্ষন করছে, কৃষকেরা এখান হতে ভালো বীজ সংগ্রহ করতে পারবে। তিনি প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি করে দেশীয় বীজ ব্যাংক স্থাপনের জন্যে আহবান জানান।
প্যাকেটজাত বিদেশী বীজতলার কারনে এখন কৃষকেরা তৈরী করছে না ধানসহ অন্যান্য ফসলের দেশীয় উন্নতমানের বীজতলা। কৃষক ও কৃষি বিভাগের স্বদিইচ্ছার অবাভে বর্তমানে দেশ থেকে কালের গহ্ববরে হারিয়ে যাচ্ছে কাটারীভোগ, বাদশাভোগ, নানীয়াশাইলসহ উন্নতজাতের সুগন্ধি ধান ও ধান বীজতলা। বেশী উৎপাদনের লোভ দেখিয়ে বিদেশী বীজতলা কোম্পানীর প্রতিনিধিরা যেভাবে কৃষকদের বিদেশী জাতের ধান,ভুট্টা,গম ও ফলমুল এবং আলু,বেগুন,পটল,সীম,ঢেড়শসহ অন্যান্য শাক-সবজি আবাদের জন্যে উৎসাহিত করছে, সেখানে দেশীয় কোন ফসলের বীজতলা সেভাবে উল্লেখযোগ্য হারে উৎপাদন করা হয়না এবং বোপন-রোপন ও সংরক্ষনে তেমন করে তদারকি করছেনা কৃষকরা।
দিঘন সিআইজি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান,সমবায় সমিতির মাধ্যমে দেশীয় বীজতলা উৎপাদন, সংরক্ষন এবং কৃষকের মাঝে বোপনের জন্যে বিতরনের ব্যবস্থা করে চেষ্টা চালানো হচ্ছে দেশী ফসল টিকিয়ে রাখার। তিনি বলেন,দেশের মাটিতে সহনীয় দেশীয় বীজের উৎপাদিত ফসলের চাহিদা এখনো প্রচুর রয়েছে তবে ব্যবসায়িক প্রতিযোগীতার কারনে সেভাবে এগুতে পারছেনা কিন্তু কৃষক চাইলে দেশীয় ফসলের সবুজ বিপ্লব ঘটানো কোন ব্যাপার নয়।
তিনি বলেন, বিদেশী কোম্পানী গুলো নিম্নমানের বীজ আমাদের দেশে উচ্চ ফলনশীল বর্ণনা দিয়ে কৃষকদের কাছে অতিরিক্ত মুল্যে বিক্রয় করছে। তারা এও বলছে যে, ওই উচ্চফলনশীল বীজ সংরক্ষনের জন্যে আমাদের কৃষকদের অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা এ বীজ সংরক্ষন করতে পারবেনা। তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী গুনগতমান সম্পন্ন ধান বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষনের জন্যে সকলের প্রতি আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ আদিবাসী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ সিং,সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল তিগ্যা, ডিআরডিএফ কো-অর্ডিনেটর জোতিষ চন্দ্র অধিকারী প্রমুখ।