নিউজ ডেস্ক:
প্রান্তিক চাষিদের জমির দলিল ছাড়া যাচাই-বাছাই করে ৫ শতাংশ সুদের হারে ঋণ কর্মসূচিতে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশকে দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ কর্মসূচি মনিটরিং ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিরাপদ মাংস উৎপাদনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কার্যক্রম শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ সভা।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোহাম্মাদ ছায়েদুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে আছেন একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। সভাপতিত্ব করছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায়।
উন্মুক্ত বক্তব্যে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নিতাই চন্দ্র দাস বলেন, এই স্বল্প ঋণ বেশি নিয়ে থাকেন প্রান্তিক চাষিরা। এদের মধ্য অনেকেরই ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমি নেই। আবার অনেকের একেবারেই কিছু নেই। এসব চাষিরা ঋণ নিত গিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন। ঋণ নিতে গিয়ে ব্যাংকের শর্তের জালে বন্দি হয়ে তারা খালি হাতে ফিরে আসেন। জমির দলিল জামানত হিসেবে না দিতে পারায় অনেক প্রকৃত চাষি এই ঋণের সুফল পাচ্ছেন না।
সুপারিশ হিসেবে তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অফিসারের সুপারিশসহ তদন্ত করে যদি তারা প্রকৃত চাষি হন তাহলে যেন ঋণ দেওয়া হয়। ব্যাংকের শর্ত শিথিল করা প্রয়োজন। এ ছাড়া অনেক ব্যাংক এই ঋণে খুব বেশি সহযোগিতা করে না।
সভার শুরুতে পাওয়ার পয়েন্টে ৫ ভাগ সুদে ঋণ কর্মসূচির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে জানানো হয়, শতকরা ৫ ভাগ সুদে ঋণ প্রদানে এগিয়ে আছে ঢাকা বিভাগ (৭৩.০৭)। কম বিতরণ হয়েছে সিলেট বিভাগে (৪০.৮৬)।
সভায় বলা হয়, অনধিক তিন মাসের মধ্য প্রজননক্ষম হতে পারে এমন বকনা বাছুর ক্রয়ের জন্য ঋণ প্রদান করা যাবে। এক্ষেত্রে দেশি জাতের বকনা বাছুরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিটি বকনা বাছুর ক্রয়ের জন্য ৪০ হাজার এবং লালনপালনের জন্য ১০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। একজন চাষি সর্বোচ্চ চারটি বকনা বাছুর কিনতে পারবেন।
মোট ঋণ বরাদ্দের পরিমাণ ৬ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। বিতরণ হয়েছে ৪ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। মোট ঋণ গ্রহণকারীর সংখ্যা ৪ হাজার ১২১ জন। ক্রয়কৃত বকনা বাছুরের সংখ্যা ৭ হাজার ৭৫১টি। কৃত্রিম প্রজননের সংখ্যা ২ হাজার ৮৫৪টি। আর ঘাস চাষ হয়েছে ৪৫৪ একর।
সভায় কোরবানির পশুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা বলেন, কোরবানির পশুর প্রক্রিয়াজাতে অবহেলা করলে মাংসে জীবাণু সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।