কেরু ডিস্টিলারিতে ডি এস (ডিনেচার্ড স্প্রিরিট) দিয়ে বিভিন্ন ব্রান্ডের প্রায় ৩ ট্রাক বিলেতি মদ উৎপাদন হত। এত মালামাল গায়েবে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলের ডিস্টিলারি বিভাগে বন্ডেড ওয়্যারহাউস (ডিস্টিলারি ভান্ডার) ইনচার্জ এ কে এম মাজেদুর রহমান ওরফে তুফানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলেও গত প্রায় ২ মাসেও অজ্ঞাত কারণে বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেনি কেরু কর্তৃপক্ষ।
দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলের ডিস্টিলারি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলের ডিস্টিলারি বিভাগে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে সহকারি ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমোশন পেয়ে ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পান। এর আগে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলের ডিস্টিলারি বিভাগে বন্ডেড ওয়্যারহাউস ইনচার্জ ছিলেন এ কে এম মাজেদুর রহমান ওরফে তুফান।
ডিস্টিলারি বিভাগে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে বর্তমান ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার সময় ডিএস (ডিনেচার স্পিরিট) ৩ নম্বর ভ্যাট গোডাউনে সরেজমিনে গভীরতা পায় ১০৯ ইঞ্চি। যার বাস্তবিক মজুদ ৩৫ হাজার ৫ শত ১২.২৩ লিটর। কিন্তু হস্তান্তর তালিকায় মজুদ দেখানো হয় ৩৯ হাজার ৭শ ১১.৫৫ লিটার। ৭ নম্বর ভ্যাট গোডাউনে সরেজমিনে গভীরতা ৫৩ ইঞ্চি। যার বাস্তবিক মজুদ ৪ হাজার ৮ শত ৪.৩০ লিটার। কিন্তু হস্তান্তর তালিকায় মজুদ দেখানো হয় ১৩ হাজার ৭ শত ৯৫.৭৩ লিটর। এছাড়া ১০ নম্বর ভ্যাটে ৪ ইঞ্চি মালামাল কম আছে। ভ্যাট নাম্বার ৩ ভ্যাট নম্বর ৭ ও ভ্যাট নাম্বার ১০ বাস্তবিক মজুদ অনুযায়ী ১৩ হাজার ১ শত ৯০.৭৫ লিটরের বেশি মালামাল কম থাকায় আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেনি।
এ ব্যাপারে ডিস্টিলারি বিভাগে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে বর্তমান ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন গত ২ মে দর্শনা কেরু অ্যন্ড কোম্পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পত্র দায়ের করেন। ওই অভিযোগ পত্রে বিষয়টি কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। কিন্তু এ নিয়ে গত প্রায় ২ মাসে কেরু কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কেরু ক্যাম্পাসে চলতে থাকে নানান আলোচনা সমালোচনা ঝড় ।
এরই মাঝে এ কান সে কান হতে হতে ঘটনাটি ২৫ জুন মঙ্গলবার কেরু ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কানে পৌছেযায়। এঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়ে চড়ে বসেন কেরু কর্তৃপক্ষ। ২৬ জুন বুধবার সকালে মিটিং শেষে দুপুরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চিনিকলের মহা ব্যাবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলীকে প্রধান করে ৪ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
এ ব্যাপারে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলের ডিস্টিলারি বিভাগের বন্ডেড ওয়্যারহাউস (ডিস্টিলারি ভান্ডার) বর্তমান দায়িত্বে থাকা এ কে এম সাজেদুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর সাহেব দর্শনার দায়িত্ব বুঝে না নিয়ে কেরুর শ্রীমঙ্গল ওয়ারহাউজে গিয়ে বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন, আর উল্টাপাল্টা কথা বলছেন, যা সঠিক না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহিন। বড় হাউজে ২/১ শত লিটার সটেজ থাকতেই পারে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চিনিকলের মহা ব্যাবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ডিস্টিলারি বিভাগের বন্ডেড ওয়্যারহাউস (ডিস্টিলারি ভান্ডার) থেকে কিছু মালামাল সটেজ হওয়ার অভিযোগে চিনিকল কতৃপক্ষ মিলের জি এম (প্রশাসন) কে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, এবিষয়ে জিএম প্রশাসনকে প্রধান করে ৪ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ ২৬ জুন বুধবার থেকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছেন। আগামি ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে প্রকৃত ঘটনা জানাযাবে।