পুলিশের গুলিবর্ষণ : হামলাকারী টিটু গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক
নিউজ ডেস্ক:দর্শনা-জীবননগর সড়কের আকন্দবাড়িয়া এলাকায় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে এক দুস্কৃতিকারী। এ ঘটনায় হামলাকারীর পিছু ধাওয়া করে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দর্শনার খালিদুজ্জামন টিটু নামের ওই দুস্কৃতিকারীকে জাপটিয়ে ধরে (দামুড়হুদা-জীবননগর) সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু রাসেলসহ সঙ্গীয় ফোর্স। আটক ওই হামলাকারী বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতেল চিকিৎসাধীন। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়া আবাসনের নিকট এ হামলার ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার বিকালের দিকে দর্শনা-জীবননগর সড়কের উথলী মোল্লাবাড়ি নামক স্থানে থ্রি-হুইলার, যাত্রীবাহী পরিবহন ও আলমসাধুর ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ৪ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু রাসেলসহ সঙ্গীয় ফোর্স। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে দর্শনা-জীবননগর সড়কের আকন্দবাড়িয়া আবাসনের নিকট পৌছালে পিছন দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা এক দূস্কৃৃতকারী পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায়। বোমাটি পুলিশের গাড়ির চালকের পাশের জ্বানালায় লাগে। এতে জানালার গ্লাস ও জানালার উইনসেড ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসময় দুস্কৃতকারী মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তার পিছু ধাওয়া করে। ওই দুস্কৃতকারী দর্শনা রশিক শাহ মাজার সংলগ্ন শামসুল ইসলাম স্থলবন্দর সড়ক দিয়ে জয়নগর বর্ডারের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। হামলাকারি দ্রুতগতিতে নিমতলা বিজিবি ক্যাম্পের অদুরে কালভার্টের কাছে পৌঁছালে পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে।
পুলিশের ছোড়া একটি গুলি হামলাকারীর পায়ে লাগলে মোটরসাইকেলসহ ওই হামলাকারি পড়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পালানোর চেষ্টা করলে তাকে জাপটে ধরেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু রাসেলসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এসময় দুস্কৃতকারীর ব্যবহৃত লাল রংয়ের একটি এ্যাপাচি ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল যার রেজিঃ নং-(চুয়াডাঙ্গা-ল-১১-৫০১৫) উদ্ধার করে। পরে আহত দুস্কৃতিকারীকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। আটককৃত দুস্কৃতকারী খালিদুজ্জামন টিটু দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার থানাপাড়ার মন্ডলবাড়ির মৃত মুজাহিদ মন্ডলের ছেলে ও চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের অনার্সের শেষ বর্ষের ছাত্র বলে জানা যায়। তবে কেন বা কি উদ্দেশ্যে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, গুলিতে তার ডান পা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এছাড়া তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকাতে রেফার্ড করা হতে পারে।
এদিকে, এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম তাৎক্ষণিকভাবে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে জানান, দর্শনা-জীবননগর সড়কের উথলী মোল্লাবাড়ি নামকস্থানে থ্রি-হুইলার, যাত্রীবাহী পরিবহন ও আলমসাধুর ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু রাসেলসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে আকন্দবাড়িয়া আবাসনের নিকট পৌছালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় ওই দুস্কৃতিকারী। পরে হামলাকারীর পিছু ধাওয়া করে একপর্যায়ে তার পায়ে গুলি করে আটক করা হয় তাকে। প্রাথমিকভাবে ওই দুস্কৃতিকারী হামলার কথা স্বীকার করেছে। তবে কেন এই হামলা তার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।