নিউজ ডেস্ক:দর্শনা হল্ট স্টেশনে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্টেশনের বুকিং সহকারী শাহীনের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধার্যমূল্যের অতিরিক্ত টাকা নিয়ে সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েলের কাছে তিনি তিনটি টিকিট বিক্রি করেন। এ ঘটনার পর বুকিং সহকারী শাহীন দর্শনা জিআরপি ফাঁড়ির ইনচার্জ তবিবুর রহমান ও ট্রেনযাত্রীদের সামনে প্রকাশ্যে তাঁর এ অপরাধের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েল তাৎক্ষণিক দর্শনা জিআরপি পুলিশের নিকট অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে টিকিট বিক্রয়ের অভিযোগ করেন স্টেশনের বুকিং সহকারী শাহীনের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েল তাঁর স্বজনদের জন্য আগামী শনিবার খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চিত্রা এক্সেপ্রেস ট্রেনের ৩টি টিকিট কাটার জন্য যায় স্টেশনে কর্তব্যরত বুকিং সহকারীর শাহীনের নিকট। শাহীন সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েলকে জানান, চিত্রা এক্সপ্রেসের দর্শনা থেকে ঢাকার সব আসন বিক্রি হয়ে গেছে। এ সময় সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েল যশোর থেকে ঢাকার টিকিটের কথা বললে বুকিং সহকারী বলেন, হ্যাঁ, আছে, কিন্তু প্রতি টিকিটে ৫০৫ টাকা লাগবে। এরপর হিসাব করে ৩টি টিকিটের মূল্য বাদদ ১৫২০ টাকা প্রদান করেন সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েল। পরে বুকিং সহকারী আসনসহ ৩টি টিকিট দেন এবং ১২০ টাকা টিকিটের সঙ্গে ফেরত দিয়ে বলেন, আপনার উপকার করলাম। ১২০ টাকা ফেরত দিলাম। মূলত বর্তমানে যশোর থেকে ঢাকা পর্যন্ত আসনপ্রতি ভাড়া ৪৫৫ টাকা। এ হিসাবে ৩টি টিকিটের মূল্য হয় ১৩৬৫ টাকা। আসলে উপকারের কথা বললেও বুকিং সহকারী শাহীন কৌশলে অতিরিক্ত অর্থ ঠিকই আদায় করে নিয়েছেন। এ ঘটনার সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েল প্রতিবাদ করলে ট্রেনযাত্রীরা টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় জমান। এ সময় ভারত থেকে আসা রাজশাহীগামী যাত্রী মসলেম উদ্দীন, সোহরাব হোসেন, লালচাঁদ মিয়াও অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে আসনসহ টিকিট প্রদানের অভিযোগ তোলেন বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে। পরে বুকিং সহকারী শাহীন দর্শনা জিআরপি ফাঁড়ির ইনচার্জ তবিবুর রহমান, সাংবাদিক ওয়াসিম রয়েল ও যাত্রীদের সামনে প্রকাশ্যে তাঁর এ অপরাধের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ওয়াসিম রয়েল তাৎক্ষণিক দর্শনা জিআরপি পুলিশের কাছে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ করেন স্টেশনের বুকিং সহকারী শাহীনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে দর্শনা হল্ট স্টেশনে স্টেশন মাস্টারের দায়িত্বে থাকা রুবাইদা খাতুন জানান, ‘বিষটি আমি শুনেছি। অবশ্যই বুকিং সহকারী শাহীন একটি বড় ধরনের অপরাধ করেছেন।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ জানান, টিকিটের ওপরে যে মূল্য লেখা থাকবে, তার বেশি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে ট্রেনের আসন-বাণিজ্য করেন, তাহলে প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের (রাজশাহী বিভাগ) পরিচালক এ বিষয়ে জানান, এ ধরনের ঘটনা অপরাধমূলক। কারোও বিরুদ্ধে প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।