আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা ? প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী ও শাশুড়ী আটক।
দর্শনা অফিসঃ দর্শনা মাইক্রো স্ট্যান্ডের পাশে গ্যারেজ মালিক মটরসাইকেল মিস্ত্রী জাকির হোসেন (৩২) নামের এক ব্যাক্তির রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালের দিকে দর্শনা মোহাম্মদপুরের চাতাল পাড়ার এ্যাড. মুছার হক লজ নামক ভাড়া বাড়িতে এ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। নিহতের স্ত্রী ঘটনার পর থেকে স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করলেও পরে হাসপাতালে মেলে গলাই ফাঁস দেওয়ার দড়ির চিহৃ। তবে মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্ট হয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে করছে এলাকাবাসী। আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। জানাগেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের কুড়ুলগাছি স্কুলপাড়ার লাল মোহাম্মদের ছেলে মটরসাইকেল মিস্ত্রী জাকির হোসেনর (৩২) তাকে প্রায় ১৫ বছর আগে জীবন নগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের হাতেম আলীর মেয়ে ববিতা খাতুন বর্ষার সাথে বিবাহ হয়। বিয়ের থেকে তাদের পরিবারের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের সমস্যা হয়ে আসছিলো। সংসারে একটু সুখের আসায় নিহত জাকির দীর্ঘদিন তার নিজ গ্রাম ছেড়ে দর্শনা মোহাম্মদপুরে একটি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রীসহ ২কন্যা জুই ও জুথিকে সাথে নিয়ে বসবাস করছিলো। তিনি দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মাইক্রোষ্ট্যান্ড সংলগ্ন দেলোয়ার হোসেনের একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে মটরসাইকেল মেরামতের কাজ করতেন।নিহত জাকির গতকাল শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে নিহতের স্ত্রী ববিতা খাতুন বর্ষা চিৎকরে করলে মহল্লার লোকজন ছুটে এসে জাকিরকে তার শয়নকক্ষ থেকে উদ্ধার করে। এসময় জাকিরের স্ত্রী বর্ষ এলাকায় ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছে খবর দেয় তার স্বামী জাকির হোসেনের স্ট্রোক করেছে। এরপর তাকে একটি মাইক্রোবাস যোগে দ্রুত নেওয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং জানান তার অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতের গলাই দাগ দেখে সন্দেহ হলে বলেন স্ট্রোকে নয় ফাঁস দেওয়ায় মৃত্যু হয়েছে।এ ব্যাপারে দামুড়হুদা থানা পুলিশ সকালেই জাকিরের স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তবে জাকিরের মৃত্যুর ঘটনা রহস্য জনক বলে ধারনা করছে এলাকাবাসি সহ মৃত জাকিরের পরিবার। এ বিষয়ে জাকিরের পিতা লাল মোহাম্মদ বলেন দির্ঘ দিন থেকে তাদের সংসারে বিভিন্ন সমস্যা থাকায় দর্শনায় গিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলো জাকির। বিভিন্ন সময় বর্ষার বাড়ির লোকজন এসে আমার ছেলের হুমকি ধামকি দেখিয়ে যাচ্ছিলো। তার মৃত্যু পরিকল্পিত একটি হত্যা বলে জানায় জাকিরের পিতার মনে প্রশ্ন স্ত্রী বর্ষা প্রথমে স্ট্রোক ও পরে গলাইদড়ি দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচারে জাকিরের পরিবার ও এলাকাবাসির মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তিনি কোন অপরাধ ঢাকতে এক মৃত্যুর ঘটনায় দুই রকম প্রচার কোন স্বার্থে। হয়তো কোন পরকিয়ার ঘটনা থাকতে পারে বলেও ধারনা করছে এলাকাবাসী। তবে পুলিশ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে জাকিরের মৃত্যুর রহস্য। এ ব্যাপারে দামুড়হুদা থানা পুলিশ সকালেই জাকিরের স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারনা জাকিরকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি শুকুমার বিশ্বাস জানান তাঁর স্ত্রীর কথায় সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ বিষয়ে দামুরহুদা মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। নিহতের লাশের ময়না তদন্তের পরে তার মরদেহ দামুড়হুদার কুড়ুলগাছিতে নামাজে জানাযা শেষে গ্রামের কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে।