নিউজ ডেস্ক: ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগটি এখন ডিজিটাল লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নি¤œমানের কাজ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা পকেটস্থ করা হচ্ছে। ফলে রাস্তা নির্মাণ ও রাস্তা রিপিয়ারিং এর কয়েক দিনের মধ্যেই আগের চেহারায় ফিরে যাচ্ছে এমনই অভিযোগ স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও পথচারীদের। এ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও দূর্নীতিবাজরা বহাল তবিয়তে থাকছেন।
বলা চলে, বাংলাদেশ একটি গ্রাম প্রধান দেশ। এ দেশের প্রাই ৭০ হাজারের ও বেশি গ্রাম রয়েছে। দেশের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ লোক গ্রামে বাস করে। অথচ জীবন ধারনের সামান্যতম সুযোগ-সুবিধাও এরা পায় না। দেশের মুষ্টিমেয় জনসংখ্যা শহরে বসবাস করে অথচ তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধার অন্ত নেই। তাদের জন্য গড়ে উঠেছে তিলোক্তমা শহর। শহরবাসী পাচ্ছে জীবন ধারনের সব রকম সুযোগ-সুবিধা। তারা আধুনিকতম গাড়িতে চড়ে, প্রাসাদোপম অট্রালিকায় বাস করে, সেখানে পৃথিবীর সব দেশের পণ্য সামগ্রী পাওয়া যায়। শহরে বিদ্যুৎ আছে (কিন্তু লোডশিডিং কম), গ্যাস আছে, সুপেয় পানির ব্যবস্থা আছে। এম.বি.বি.এস ডাক্তার আছে, হাসপাতাল আছে, বড় বড় ওষুধ ফার্মেসী আছে, ভালো খাবারের ব্যবস্থাসহ সুন্দর যাতায়াতের রাস্তার সু-ব্যবস্থা আছে। যদিও কখনও এসব সুযোগ-সুবিধার সামন্যতম ক্রটি ঘটে তাহলে শহরে বসবাসকারী শিক্ষিত লোকেরা তাদের অসুবিধার কথা সবাইকে সোচ্চারে জানিয়ে দিবে। কিন্তু এই ৭০ হাজারের ও বেশি গ্রামের মধ্যে ডাকবাংলা ত্রিমহনী হতে বাজার গোপালপুরসহ পাশর্^বতী এলাকার মানুষ কাদের কাছে বলবে এ অসুবিধার কথা? এই নিয়ে প্রশ্ন পথচারীসহ এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, ত্রিমহনী-বাজার গোপালপুর সড়কের ত্রিমহনী থেকে ইনসাফ মোড় পর্যন্ত গত কয়েক মাস আগে রিপিয়ারিং এর কাজ শেষ হয়। দুঃখের বিষয়টা হলো এখন সে রাস্তাটি বড় বড় গর্তে পরিণত হয়ে গেছে। এ বিষয়ে পথচারী শাহাদৎ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই বর্তমানে সব চেয়ে দুর্নীতি এখন সড়ক বিভাগটি। কারণ এই রাস্তাটি আজ কয়েক মাস আগে রিপিয়ারিং করেছে সওজ। কিন্তু দেখেন আজ কয়েক দিনের ব্যবধানে স্থানীয়রা মাছ চাষ করলেও করতে পারেন। শুধু তাই নয় এমন অবস্থা হালকা বৃষ্টি এলে দেখে মনে হয় রাস্তা তো নয় এটা বড় একটা মাছ চাষের খাল। আর খরা হলে পাকা রাস্তারটি মাটির রাস্তার ন্যায়, ধূলার কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে চরম দূর্ভোগে পড়তে হয় পথচারীদের। এদিকে ইনসাফ মোড় থেকে বাজার গোপালপুর পর্যন্ত রিপিয়ারিং কাজের অনুমিতি হলেও কাজ হয় বাদপুকুরিয়া ঈদগাহ পর্যন্ত।
এ বিষয়ে ঔষুধ কোম্পানীতে চাকুরীরত এক মার্কেটিং ম্যানেজার এ প্রতিবেদককে জানান, দুর্নীতি দেখেছি কিন্তু এখন এ আবার কোন ধরনের দুর্নীতি দেখছি ভাই। তার কারণ হলো আমার মনে হয় রাস্তাটিতে বড় বড় গর্ত রেখে দিয়ে ভালো জায়গা খুড়ে রিপিয়ারিং এর কাজ করেছে আর গর্ত রেখেছে, সাধারণ মানুষ আর আমাদের মতো পথচারিদের সাঁতার শেখার জন্য। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, এই বিষয়গুলো শুধু সাংবাদিক ও যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া তুলে ধরার মতো আর কেউ নেই। সাধারণ মানুষ বাধা দিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা হুমকি দিয়ে থাকেন বলেও তিনি জানান।
এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ত্রিমহনীর বড় এক ধানের ব্যবসায়ী জানান, এই রাস্তাটি নি¤œমানের ইট-খোয়া-পিচ দিয়ে তৈরী করার কারণে খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বাদপুকুরিয়া কারীর মোড় যুব সমাজের সভাপতি ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন জানান, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের হলিধানী বাজার থেকে নগরবাথান পালপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল দশা। প্রতিনিয়ত এ রাস্তাটি দিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা গাড়িতে করে চলাফেরা করলেও দেখার কেউ নেই। সুতারং ভুক্তভোগী এলাবাসীর দাবীর পাশাপাশি এলাকার সুশীল সমাজের মানুষেরা এ রাস্তা দুটির মেরামত করনে ও সাধারণ মানুষের এই দূর্ভোগ থেকে মুক্ত করার দাবি জানিয়ে, উধ্বর্তন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।