শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫

তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের মূল শিক্ষা

তাওহিদ বা মহান আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ইসলামের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার মৌলিক ও সর্বপ্রধান বিষয়। ইসলামী শরিয়ার সব নীতিমালা, হুকুম-আহকাম ও জীবন নির্দেশিকা এ তাওহিদের ধারণা ও বিশ্বাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাওহিদের মূল শিক্ষা নিম্নরূপ:

পার্থিব-অপার্থিব যাবতীয় সুখ শান্তি এ তাওহিদি আকিদার ওপর নির্ভরশীল। এর বিপরীত ধারা পার্থিব লাঞ্ছনা অশান্তি ও অপার্থিব দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে থাকে। আল কোরআনের বাণী : ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে যেন আকাশ থেকে পড়ে গেল, অতঃপর তাকে পাখি ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে অথবা বাতাস তাকে নিক্ষেপ করবে অনেক দূরবর্তী কোনো স্থানে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩১)

পারস্পরিক সৌহার্দ্য, স্নেহ ও মমতাপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণে একত্ববাদের বিশ্বাস এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ, বিশ্বাসের একত্ব যখন মানবিকতার একত্ব সৃষ্টি করে তখন সমাজ সুন্দর ও সুষ্ঠু এবং সৌহার্দ্যময় হয়ে থাকে।

তাওহিদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো ইবাদত-বন্দেগি একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত হবে। কারণ, মুশরিকদের উপাস্যগুলো তাদের কোনো ধরনের ভালো-মন্দ করতে অক্ষম। আর অক্ষম কোনো বস্তু ইসলামের অযোগ্য। কোরআনের ভাষায় : ‘বলুন হে নবী! হে আহলে কিতাব! তেমরা এমন এক বাণী ও মতদর্শের দিকে আস, যা আমাদের ও তোমাদের জন্য এক এবং অভিন্ন যে, আমরা শুধু আল্লাহর ইবাদত করব এবং তার সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবো না এবং আল্লাহ ছাড়া আমাদের পররস্পরকে রব হিসেবে গ্রহণ করবো না।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৬৪)

তাওহিদের অন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো, মানুষ তার জীবন পরিচালনা করবে আল্লাহর দেওয়া পথনির্দেশিকা ও বিধিনিষেধ মোতাবেক। অন্য কোনো মানবরচিত মতবাদ তার জীবনে প্রভাব ফেলবে না। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটি এবং ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক জীবন পর্যন্ত এক কথায় জীবনের সব ক্ষেত্রে পরিচালিত হবে এক আল্লাহর নীতির আলোকে। আল্লাহ বলেন, ‘হুকুম একমাত্র আল্লাহরই।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৭)

আল্লাহর জন্য আত্মসমর্পণ ও আনুগত্য একমাত্র তাঁর জন্য নির্ধারণ করা তাওহিদি বিশ্বাসের মূলমন্ত্র। পবিত্র কোরআনে এসেছে : ‘তোমরা আল্লাহকে এবং তাঁর রাসুলকে অনুসরণ করো।’ (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ১২)

মোট কথা, তাওহিদ হলো যাবতীয় পূর্ণতার অধিকারী হিসেবে আল্লাহকে এক, একক ও অংশীহীন মনে করা। এবং একান্তভাবে তাঁর জন্য ইবাদতকে নির্দিষ্ট করা। জীবন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া পথ ও পন্থা অনুসরণ করা।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular