‘তরুণদের আত্মত্যাগে অর্জিত অভ্যুত্থান এবারের বইমেলার তাৎপর্য’

0
7

জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের সাহসী তরুণদের অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এবারে গণ-অভ্যুত্থানের বইমেলা জাতির সামনে নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে জাতির ঘাড়ে ১৬ বছর ধরে চেপে থাকা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটেছে।

তিনি বলেন, ‘অভুত্থানে আমাদের সাহসী তরুণদের অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। এ বিজয়ের মাধ্যমে এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ইস্পাত কঠোর প্রতিজ্ঞা।’

এসময় জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ড. ইউনূস বলেন, ‘এবার গণ-অভ্যুত্থানের বইমেলা নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে এসেছে। এবারের একুশের প্রেক্ষিত আমাদের নতুন দিগন্তে প্রতিস্থাপিত করেছে।’

তিনি বলেন, এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য: ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একুশে মানেই আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া, অবিরাম সংগ্রাম। বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারের বুকের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিল, তাতে ছিল জুলাই অভ্যুত্থানকে নিশ্চিত করার মহা বিস্ফোরক শক্তি।

তিনি আরও বলেন, অর্ধশতাব্দী পর এই মহা বিস্ফোরণ গণ অভুত্থান হয়ে আমাদের পাল্টে দিলো। নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রথিত করে দিয়ে গেল। ১৭ কোটি মানুষের প্রতিজনের স্বত্ত্বায় এই প্রত্যয় গভীরভাবে গ্রথিত হলো। একুশ আমাদের মূল স্বত্ত্বার পরিচায়। একুশ আমাদের দৃঢ় বন্ধন, যা সব কিছুর ঊর্ধ্বে। এই জন্য আমরা শহীদ মিনারে ছুটে যাই। সেখানে জাতীয় ঐক্য খুঁজে পাই। একুশ আমাদের পথ দেখায়। জুলাই অভ্যুত্থান জাতিকে এক ঐতিহাসিক গভীরতায় ঐক্যবদ্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং মানবিক দিক থেকে বিধ্বস্ত এক দেশকে নতুন করে তৈরি করার সাহস খুঁজে পেয়েছি।

‘একুশ আমাদের দুঃসাহসিক বানিয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থান যার প্রমাণ’—যোগ করেন ড. ইউনূস।

এর আগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মেলার উদ্বোধনী মঞ্চে সাত গুণী ব্যক্তির হাতে বাংলা একাডেমি পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বক্তব্য দিয়ে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী দেশের বৃহত্তম এ বইমেলা চলবে। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হয় প্রাণের বইমেলা।

বইমেলায় অংশগ্রহণকারী ৭০৮ জন প্রকাশকের মধ্যে ৯৯টি স্টল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, ৬০৯টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণ করা হবে। গত বছর বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।