নিউজ ডেস্ক:
৫০ শতাংশ চোখে কম দেখেন বা ক্ষীণ দৃষ্টি সম্পন্ন। আর ১২ শতাংশের চোখের ছানির কারণে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।গতকাল রবিবার (১২ মে) সকালে বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব তথ্য উঠে আসে।
পঞ্চম বিশ্ব নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ উদযাপনের অংশ হিসেবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) ঢাকা ওয়েস্ট যৌথভাবে এই আয়োজন করে।সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হোসাইন।আরও উপস্থিত ছিলেন, বিআরটিএ’র পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রতিনিধি ডা. তারা কেশরাম, জেসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ইরফান ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি রুস্তম আলী খান, ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন আহমেদ মজুমদার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক (বার্তা) ড. সৈয়দা তাসমিয়া আহমেদ, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী।গত ২৩-২৪ এপ্রিল ব্র্যাক ও জেসিআই-এর উদ্যোগে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এক চক্ষুশিবির পরিচালিত হয়। সেখানে ১২ শতাধিক বাসচালক ও তাদের সহযোগীদের বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ দেওয়া হয়। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ৩০ জন চিকিৎসক ও মেডিকেল আ্যসিসটেন্ট এতে অংশ নেন।এদিন আলোচনা সভায় চক্ষুশিবিরে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে উপস্থাপন করা হয়। ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রধান কামরান উল বাসেত উল্লেখ করেন, দুইদিনের চক্ষুশিবিরে ৭৬ শতাংশ চালক ও সহযোগীকে চশমা ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। ১২ দশমিক ৬ শতাংশের চোখে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর শুধু ওষুধ দেওয়া হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশকে।চক্ষুশিবিরে পাওয়া তথ্যে আরও উঠে এসেছে, ৭২ শতাংশ চালক ও সহযোগী জীবনে একবারও চোখের ডাক্তারের কাছে যাননি। অথচ তাদের ২১ শতাংশই দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করেন। এই অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসের চিন্তা করাটাই অবাস্তব, বলেন কামরান উল বাসেত।বিআরটিএ’র পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ড্রাইভারদের চোখের চিকিৎসায় আরও উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী তার আলোচনায় ড্রাইভারদের চোখের স্ক্রিনিং করার ওপর জোর দেন। একই প্রতিষ্ঠানের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, ড্রাইভারদের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি গাইডলাইন তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন এবং এ কাজে তাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন।পরিবহন মালিক সমিতির দুই নেতা রুস্তম আলী খান ও হোসাইন আহমেদ মজুমদার ড্রাইভারদের চক্ষুপরীক্ষা ও চিকিৎসার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতে এই কর্মকাণ্ডে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাসে দেন।জেসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ইরফান ইসলাম বলেন, আমরা বছরজুড়েই সমন্বিতভাবে এ ধরনের কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা করব।জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জহরুল ইসলাম বলেন, চালকদের অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। এর জন্য আমাদের জাতীয় পর্যায়ে একটি নীতিমালা প্রয়োজন।ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের পরিচালক আহমেদ নাজমুল হোসেন বলেন, চালকদের দৃষ্টিশক্তি নিয়ে এর আগে আমরা কিছুই জানতাম না। এ ধরনের গবেষণা এটাই প্রথম বলেও জানান তিনি।