নিউজ ডেস্ক:
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার তিন দিন আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা করা হয়েছে। আমেরিকারই এক নারী নিজ দেশের নব্য প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন। এর আগেও বেশ কয়েকজন নারী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। তবে এমন অভিযোগে মামলার ঘটনা এই প্রথম।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে মামলার বিষয়ে ঘোষণা দেন সামার জার্ভোস নামের ওই নারী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী গ্লোরিয়া অলরেড। সামার জার্ভোস জানান, ২০০৭ সালে তিনি ট্রাম্পের কাছে চাকরির সুযোগ চেয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প তা করেননি। উল্টো তার সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন।
মামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্প বা তার দলের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে অক্টোবর মাসে ‘অ্যাকসেস হলিউড’ নামের একটি অনুষ্ঠানের ভিডিও প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্প অনুষ্ঠানের উপস্থাপক বিলি বুশকে বলছেন, তিনি নারীদের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলেও নিজে ‘তারকা’ বলে পার পেয়ে যাবেন। ওই ভিডিও প্রকাশের পর কেবল ট্রাম্পের বিরোধীপক্ষ ডেমোক্রেটই নয়, নিজের রিপাবলিকান শিবিরেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। ওই অনুষ্ঠানে তার করা মন্তব্যের কারণে ক্ষমাও চাইতে হয় তাকে।
অক্টোবর মাসে ওই ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার দিন ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি যা বলেছি এবং যা করেছি তার জন্য অনুতপ্ত। এক দশক আগের যে ভিডিও আজ প্রকাশিত হয়েছে, তা আমার ওই ধরনের আচরণেরই একটি। আমাকে যারা চেনেন, তারা জানেন, এই কথাগুলো আমার প্রতিনিধিত্ব করে না। তবে যা বলেছিলাম, তা ছিল ভুল এবং তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
ওই ঘটনার পর ‘অ্যাকসেস হলিউড’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক চাকরিচ্যুত হন। রিপাবলিকান নেতা ও হাউজ স্পিকার পল রায়ান ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণার অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বয়ে যায় নিন্দার ঝড়। অনেক নারীই তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলতে থাকেন।
তবে ট্রাম্প এসব অভিযোগকে তারকাখ্যাতি পাওয়ার উপায় হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং অভিযোগকারীদের মিথ্যাবাদীও বলেন। কোনও নারীকে যৌন হয়রানি করেননি বলেও দাবি করেন। ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো উড়িয়ে দেন। ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পও জোর দিয়ে বলেন, তার বাবা এমন কাজ করার মতো মানুষ নন।
ট্রাম্প, তার পরিবার ও নির্বাচনী শিবিরের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও ১০ জনেরও বেশি নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের কথা তুলে ধরেছেন সাংবাদিকদের কাছে। তারা বর্ণনা করেছেন, ট্রাম্প কিভাবে তাদের যৌন হয়রানি করেছেন। তবে তাদের কেউই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেননি। আইনজীবী গ্লোরিয়া অলরেডের মক্কেল সেই কাজটিই করেছেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের তিন দিন আগে।