নিউজ ডেস্ক:
বিমসটেকের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের অফুরন্ত সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারস্পরিক সহায়তা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২১ ভাগ বিমসটেক জোটভুক্ত দেশগুলোতে বাস করছে। জোটের সমষ্টিগত জিডিপির পরিমাণ ৭৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হলেও দেশগুলোর সম্মিলিত বাণিজ্যের পরিমাণ এখনও বিশ্ববাণিজ্যের মাত্র ৭ শতাংশ। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য বাড়িয়ে এ অঞ্চলের জনগণের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
ভারত সফররত শিল্পমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার কলকাতায় তিন দিনব্যাপী আয়োজিত বিমস্টেক প্রদর্শনী-২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শনিবার শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান হয়।
ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) সভাপতি সসওয়াত গোয়েনকা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রী সাধন পান্ডে ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব প্রশান্ত আগরওয়াল, মিয়ানমারের বিমসটেক প্রতিনিধি লাপাই ঝাউ গুন, ঝাড়খণ্ডের শিল্প অধিদপ্তরের সচিব সুনীল কুমার বার্ণওয়াল এবং আইসিসির সিনিয়র সহসভাপতি রুদ্র চ্যাটার্জী।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য এলাকা গঠনের কাজ চলছে। এর জন্য জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্রুত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা জরুরি। পাশাপাশি দেশগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরে এগিয়ে আসতে হবে।
সম্মিলিতভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দেশগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটি বাড়ানোরও তাগিদ দেন শিল্পমন্ত্রী।
আমু বলেন, বিমসটেক সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতে সহায়তা জোরদারের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, সংস্কৃতিক ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ, ব্লু ইকোনোমির সুবিধা কাজে লাগানোসহ অন্যান্যখাতে পারস্পরিক সহায়তার সুযোগ রয়েছে। এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে জোটভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। কলকাতায় আয়োজিত বিমসটেক ফোরাম এ সংক্রান্ত কর্মপন্থা ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি চাল, মিঠা পানির মাছ এবং ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ স্থান অধিকার করে আছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের ১২৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ইউরোপের উল্লেখযোগ্য দেশগুলোতে বাংলাদেশে নির্মিত জাহাজ রপ্তানি হচ্ছে। এ ছাড়া ২০১৮ সাল নাগাদ সফটওয়্যার খাত থেকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করছে।