কক্সবাজার প্রতিনিধি:
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান ওরফে মন্নান মেম্বার প্রকাশ ইয়াবা মান্নান (৩০)।
সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণ পাড়া এলাকার মো. ইউনুসের ছেলে। সাবরাং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
সেই মান্নান দীর্ঘ দিন ধরে নিজের মালিকানাধীন ট্রলার দিয়ে পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বড় বড় ইয়াবার চালান এনে শাহপরীর দ্বীপসহ কক্সবাজার, চট্টগ্রামে পাচার করে আসছেন। এমনকি দীর্ঘদিন নিজের মালিকানাধীন ট্রলারের মাঝি শাহপরীর দ্বীপের মাঝের পাড়া এলাকার মৃত মোছা আকবর এর ছেলে আবুল হোছন (৫৪) কে দিয়ে সাগর পথে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ইয়াব পাচার করে আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে গাড়ী, বাড়ি ও জমি জমাসহ কোটি কোটি টাকার পাহাড় বনে গেছে।
শুধু তাই নয় সেই মান্নানের নেতৃত্বে ইয়াবা, মানব পাচার ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রি পাচার করে আসলেও কোন বাহিনীর নজর পড়েনি৷
ইয়াবা ও মানব পাচার করে মোটা অংকের টাকা খরচ করে হয়ে যান ইউপি সদস্য।
অবশেষে গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় র্যাব-১৫ এর (সিপিসি-১) টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকষ একটি আভিযানিক দল মাদকের চালান পাচারের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ মাঝের পাড়ায় মাদক বিরোধী অভিযানে যায়। অভিযানকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয় মৃত মোছা আকবর এর ছেলে আবুল হোছন (৫৪), তার ছেলে মোঃ মোস্তাক আহমদ (২১) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও ইয়াবার মূল মালিক ইউপি সদস্য মন্নান মেম্বার কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
উক্ত ১ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবার মালিক হিসেবে পলাতক আসামি করে ২৫ ডিসেম্বর টেকনাফ মডেল থানায় ৫২/১২/২৪ ইংরেজি মাদক আইনে মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ৭ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া ইয়াবা, মানব পাচার ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রিক পাচারের জন্য ট্রানজিট পয়েন্ট। ওই ট্রানজিট পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ করে মান্নান মেম্বার বাহিনীর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট।
সেই ইউপি সদস্য না হওয়ার আগে থেকে ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয় এই সিন্ডিকেট।
মান্নান বাহিনী মিয়ানমার ভিত্তিক শীর্ষ ইয়াবা কারবারীদের সাথে আতাঁত করে এলাকার উঠতি বয়সী যুবকদের অল্পদিনে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে বৃহত্তর সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এরপর শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের দক্ষিণ পাড়াসহ বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা এদেশে নিয়ে এসে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। নামে-বেনামে গাড়ী, বাড়ী ও অঢেল সম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি এলাকার নিরীহ লোকজনকে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে বলেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে। ফলে বাহিনীটি শাহপরীর দ্বীপসহ পার্শ্ববতী এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সিএনজি ভাংচুর, হামলা, লুটপাট সৃষ্টির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এই বাহিনীতে মান্নানের সাথে রয়েছে আরও এলাকার চিহ্নিত ডাকাত ও সন্ত্রাসী। বর্তমানে এই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এলাকায় ঘুরছেন প্রকাশ্যে। সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছেন ইয়াবা ও মানব পাচার।
রহস্যজনক কারণে আওয়ামীলীগ সরকারের সময়েও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গিয়াস উদ্দিন বলেন, টেকনাফে অপরাধী যে দলের হউক না কেন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে৷ অপরাধী কোন দলের নই৷ অতি শিগগিরই সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে৷