রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫

ঝিনাইদহ শহরে যুবতী নারী দিয়ে প্রতারণার ভয়ঙ্কর ফাঁদ সাত প্রতারক গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক:

ঝিনাইদহ শহরের পাড়ায়-পাড়ায় জিনাহ-ব্যাভিচারের পাশাপাশি যুবতী নারী দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। মোবাইলে প্রেমের অভিনয় করে টাকা দাবি করা হচ্ছে। টাকা না দিলে যুবতীর সঙ্গে নগ্ন করে ছবি উঠিয়ে ফাঁস করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ রকম একটি চক্রের ৭ সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে রয়েছেন পাঁচ যুবতী নারী। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শৈলকুপা উপজেলার বাহির রয়েরা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে তন্মী (২৫), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের আড়মুখী গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে সুমি (২৪), নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের প্রফুল্ল কুমারের ছেলে শ্রী প্রদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস (৩০), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মায়াধরপুর গ্রামের আফান উদ্দিনের ছেলে রাসেল হোসেন (২৫), কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামের খেলাফত মালিতার মেয়ে ইতি খাতুন (২২), ঝিনাইদহ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট কামারকুণ্ডু গ্রামের সাগরের স্ত্রী লাবনী খাতুন (২০) ও নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা গ্রামের মৃত হারুনের স্ত্রী সোহানা (২৫)।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট গোপালপুর গ্রামের সমশের মণ্ডলের ছেলে আনিচ মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয়ের সূত্র ধরে শৈলকূপা উপজেলার বাহির রয়েরা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে তন্মীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই মোতাবেক তন্মী আনিসের নিকট অসুস্থার কথা বলে ৫ হাজার টাকা চান। আনিচ তাঁকে ২ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। তন্নী আনিচকে শহরের ব্যাপারীপাড়ায় আড়মুখী গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে সুমির ভাড়া বাড়িতে আসতে বলেন। আনিচ ৩১ জুলাই বিকেলে ২ হাজার টাকা নিয়ে তন্নীর কথামতো সুমির ভাড়া বাসায় গিয়ে দরজায় নক করেন। ভেতর থেকে সুমি দরজা খুলে দিলে আনিচ এবং তন্নী বাসার ওয়েটিং রুমে বসেন। এ সময় নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের প্রফুল্ল কুমারের ছেলে শ্রী প্রদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস সুমির পাশের রুম থেকে বেরিয়ে এসে আনিচকে ফাঁদে ফেলে দাবি করেন ৫০ হাজার টাকা। টাকা না দিলে তন্নীর সঙ্গে আনিচের উলঙ্গ ছবি তুলে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তন্নী কাপড় খুলে র্অধনগ্ন হয়ে পড়েন। আনিস তাঁদেরকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে তন্নী, সুমি ও শ্রী প্রদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস তাঁকে মারধর করেন। আনিস বাধ্য হয়ে তাঁর মায়ের কাছে ফোন করে ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলেন। আনিসের মা হাটগোপালপুর বাজারে এসে তন্নীর বিকাশ নম্বরে ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। স্থানীয় লোকজন তন্নী, সুমী ও শ্রী প্রদ্যুৎ কুমারের কবল হতে আনিসকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি পুলিশ জানতে পেরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, গত রোববার রাত ৯টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের আল-হেলাপাড়া থেকে রাসেল হোসেন, ইতি খাতুন ও লাবনী খাতুনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কাজ চালিয়ে আসছিলেন। এভাবে শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় চলছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড। যার বেশির ভাগ পুলিশের অগোচরে চলছে। এক শ্রেণির টাউট বাটপার ও প্রতারক শ্রেণির মানুষ এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, এ ধরনের কাজকর্ম করে এক শ্রেণির মানুষ যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular