জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের বলিষ্ট পদক্ষেপে সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমনে জিরো টলারেন্সে জেলাব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। অপরাধ করে সহজে পার পাচ্ছে না কেও। আনাচে কানাচে চষে বেড়াচ্ছে পুলিশ। সেই সাথে মাঠে রয়েছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। অপরাধ নিয়ে তাদের রিপোর্ট আসা মাত্রই এ্যাকশানে নেমে পড়ছে ঝিনাইদহের পুলিশ। ইতিমধ্যে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদকের বিষয়ে পুলিশের জিরো টলারেন্স প্রশংসিত হয়েছে। ঝিনাইদহের নবাগত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান যোগদানের পর থেকেই গতি বেড়েছে অপরাধ দমনে। তিনি সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের হেমিও চিকিৎসক সমির খাজা, কালীগঞ্জের হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক, সেবায়েত ও পুরোহিত হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেই ক্ষ্যন্ত হয়েছেন। জামায়াত শিবিরের আস্তানা তছনছ করে ছেড়েছেন। বর্তমান শিবির ও জামায়াতের অনেক বড় বড় নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। পুলিশের জোরদার অভিযানে দেশ ছেড়েছেন অনেক জামায়াত নেতা। শিবিরের অনেক নেতাও পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে। জামায়াত নেতা ড. মোজাম্মিল ও নুর মোহাম্মদ দেশের বাইরে চলে গেছেন। এর মধ্যে ড. মোজাম্মিল মালয়েশিয়া ও নুর মোহাম্মদ লন্ডন গেছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ অভিযানে শিবির ও জামায়াতের বড় বড় নেতাকর্মী নিহত হওয়ার পর দলটির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে চলে যায়। পুলিশী তদন্তে জেলায় চাঞ্চল্যকর কিছু হত্যার সাথে কতিপয় শিবির কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পায় পুলিশ। আদালতে শিবির কর্মীদের স্বীকারোক্তিতে জেলা ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান যোগদানের পরপরই সন্ত্রাস, জঙ্গী, মাদকসহ যে কোন অপরাধ মদনে পলিশের জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষনা করেন। ফলে পুলিশ অভিযানের ধারাবাহিতকা বজায় থাকে। ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলিষ্ট পদক্ষেপে গত ১লা জানুয়ারি থেকে ২৮শে ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত জেলাব্যাপী এ অভিযান পরিচালিত হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন মামলা ও গ্রেফতারী পরোয়ানা সংক্রান্ত মোট ১৭৩৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর মধ্য নিয়মিত মামলায় গ্রেফতার করা হয় ৪৭২ জন আসামী। যার মধ্যে রয়েছে বিএনপি ও জামায়াত এবং শিবিরের সক্রিয় কর্মী। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নাশকতা, সহিংসতা ও রাষ্ট্রবিরোধী মামলা রয়েছে। এছাড়া গত ফেব্রæয়ারী মাস জুড়ে বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানাভূক্ত ১৬ ও অন্যান্য ধারায় ৭৮ জন আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ ফেব্রæয়ারী-২০১৮ মাসে অভিযানে ৩৭৮ বোতল ফেন্সিডিল, ০৫ কেজি ৯৬০ গ্রাম গাঁজা, ৩২২ পিচ ইয়াবা, ৪৭২টি মামলা রুজু ও সহ ১৭৩৩ জন আসামী গ্রেফতার করা হয়। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারেও গঠন করা হয় বিশেষ টিম। পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক গঠিত টিম দিন ও রাতে অভিযান পরিচালনা করে চলেছেন। তাছাড়া ঝিনাইদহ জেলায় অবৈধ ও রেজিষ্ট্রেশন বিহীন মোটর সাইকেল আটকে বছরব্যাপী অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে এ সংক্রান্তে ১৬৩৩টি মামলা করা হয় এবং ১৮৫ টি রেজিষ্ট্রেশন বিহীন মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়। এছাড়া সর্বশেষ ফেব্রæয়ারী-২০১৮ মাসে পুলিশ অভিযানে আরো গ্রেফতার হয় ঝিনাইদহ সদরে ৫৯৫, শৈলকুপায় ৩৮৮, হরিনাকুন্ডুতে ১৮১, কালীগঞ্জে ২৬১, কোটচাঁদপুরে ৮৩, মহেশপুরে ২১১, ডিবি ঝিনাইদহ ১৪জন সহ ১৭৩৩ জন গ্রফতারের পরে জেলা জুড়ে মানুষের মাঝে এখন ধারণা জন্মেছে, সে যে দলেরই হোক অপরাধ করে আর পার পাওয়া যাবে না।